ক্ষমতা হারানোর দ্বারপ্রান্তে ইম’রান খান!
ক্ষমতা হারানোর দ্বারপ্রান্তে পা’কিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইম’রান খান৷ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনের সাড়ে তিন বছর যেতে না যেতেই ভাগ্য যাচাইয়ের মুখোমুখি পড়েছেন তিনি। বিরোধীদের চাপ ও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে আগামী শুক্রবার তার বি’রু’দ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব উঠছে পার্লামেন্টে। ভোটে হারলে পতন হবে তার সরকারের। গতকাল পর্যন্ত বিরোধীদের যে পকিল্পনার কথা জানা গেছে, তাতে গদি হা’রা’নোর মুখে রয়েছেন ইম’রান।
আস্থা ভোট এড়িয়ে ইম’রান ক্ষমতায় থাকতে চাইলে সাম’রিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের আশ’ঙ্কাও করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা৷ মূলত দেশের চরম অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণেই আবার মেয়াদ পূর্ণ হবার আগে সরকার পরিবর্তনের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি হতে চলেছে পা’কিস্তানে৷ পা’কিস্তানে মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধির ধারা এখনো অব্যাহত৷ দ্রব্যমূল্য আকাশছোঁয়া৷ ইম’রান সরকারের বি’রু’দ্ধে অবশ্য সরকার পরিচালনায় সার্বিক ব্যর্থতার অ’ভিযোগও তোলা হয়েছে এবং এসব অ’ভিযোগ শুধু বিরোধীদের নয়, ইম’রানের পা’কিস্তান তেহরিক-ই ইনসাফ (পিটিআই)-এর অন্তত ২৪ জন সদস্যও এ বিষয়ে বিরোধীদের সঙ্গে একমত বলে সংবাদমাধ্যমের খবর৷
আর তাই আগামী শুক্রবার সংসদে অনুষ্ঠেয় আস্থাভোটে তাদের ভোটও যেতে পারে ইম’রানের বি’রু’দ্ধে৷ নিজের দলের সাংসদরাও বি’রু’দ্ধে ভোট দিলে সাড়ে তিন বছরের মা’থায় ইম’রান খানের বিদায় নিশ্চিত বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকেরা৷ ৩৪২ সদস্যের সংসদের নিম্নকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে কমপক্ষে ১৭২টি ভোট পেতে হবে ইম’রান খানের সরকার, বর্তমান পরিস্থিতিতে তা একরকম অসম্ভব৷
পা’কিস্তানের সংসদের নিম্নকক্ষ জাতীয় পরিষদের স্পিকার আসাদ কায়সার ইতিমধ্যে অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের তারিখ ঘোষণা করেছেন। সে অনুযায়ী আগামী ২৫ মা’র্চ সকাল ১১টায় ইম’রান সরকারের বি’রু’দ্ধে অনাস্তা প্রস্তাবটি তোলা হবে। সংবিধান অনুযায়ী, অনাস্থা প্রস্তাব যথাযথভাবে স্পিকার বা সংসদ সচিবালয়ে জমা দেওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে সংসদ অধিবেশন ডা’কা বাধ্যতামূলক। সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলগুলোর আইনপ্রণেতারা অনাস্থা প্রস্তাবটি জমা দিয়েছিলেন গত ৮ মা’র্চ৷ সে অনুযায়ী ২২ মা’র্চের মধ্যেই স্পিকার আসাদ কায়সারের অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের জন্য বিশেষ অধিবেশন ডা’কার কথা।
অথচ অনাস্থা প্রস্তাবের জন্য ধার্য করা হয়েছে ২৫ মা’র্চকে৷ দুদিন পর প্রস্তাব উত্থাপনের তারিখ নির্ধারণের কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে সংসদ সচিবালয় ২২ থেকে ২৩ মা’র্চ জাতীয় পরিষদের মূল কক্ষে অনুষ্ঠেয় ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ৪৮তম সম্মেলনের কথা উল্লেখ করেছে। শুধুরতে সরকারবিরোধীরা দেরিতে অধিবেশন ডা’কায় প্রতিবাদে সোচ্চার হলেও পরে তারা তা মেনে নেন৷ তবে বিরোধীরা বলছেন, ইম’রান খানের সরকার সময় নষ্ট করার কৌশল অবলম্বন করে ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করছেন৷ অনাস্থা ভোট কমানো নিশ্চিত করতে বিরোধীদের অ’প’হ’রণ করা হতে পারে- এমন আশ’ঙ্কাও করছেন তারা৷
এদিকে আগামী ২৭ মা’র্চ রেড জোনে আলাদা দুটি সমাবেশ ডেকেছে সরকারী দল তেহরিক-ই ইনসাফ ও সরকার বিরোধী দলগুলো৷ সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে প্রবল সং’ঘ’র্ষের আশ’ঙ্কা একেবারেই উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না৷ সং’ঘ’র্ষের কারণে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে কী হবে? পা’কিস্তানের দ্য ডন পত্রিকার ফরিদ হুসাইন মনে করেন, পু’লিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হলে পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে সাম’রিক বাহিনী আবার চলে আসতে পারে ক্ষমতায়৷