কুসিক নির্বাচনে নৌকার মাঝি কে, জানা যাবে সন্ধ্যায়
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে কে হচ্ছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী, এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে কে হচ্ছেন নৌকার প্রার্থী তা জানা যাবে আজ।শুক্রবার (১৩ মে) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সরকার মনোনয়ন বোর্ড কুসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী চূড়ান্ত করবে বলে দলের একটি সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আজ গণভবনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। দলীয় প্রধান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কুসিকে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর ঘোষণা দেবেন। তাই সব দৃষ্টি এখন গণভবনে। নৌকার মাঝি কে হবেন সন্ধ্যার আগেই জানা যেতে পারে।
তবে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থিতা নিয়ে নগরজুড়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। বিশেষ করে সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য সীমা’র দলীয় মনোনয়ন জমা দেওয়ায় প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার বিষয়ে নগরজুড়ে নানা মুখে নানা কথা শোনা যাচ্ছে।কুসিক নির্বাচনের মনোনয়ন প্রসঙ্গে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, মনোনয়ন বোর্ডের সভায় তৃণমূলের মতামতসহ বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। নেত্রী (আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা) তো কিছু খোঁজখবর রাখেন। ওনার নিজস্ব কিছু মেকানিজম আছে, বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে খোঁজখবর নেন। আম’রা আশা করছি, জনগণের কাছে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য প্রার্থীকেই নৌকা প্রতীক উপহার দেওয়া হবে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কুমিল্লা সিটি নির্বাচনে তৃণমূল আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত একক প্রার্থী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাতের নাম বেশি আ’লো’চি’ত হচ্ছিল। গত বুধবার শেষদিন সংরক্ষিত মহিলা এমপি আঞ্জুম সুলতানা সীমা’র মনোনয়ন ফরম জমাদানের ফলে কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে হঠাৎ করেই নানা সমীকরণ দাঁড়াল। একই দিন মনোনয়নপত্র জমা দেন দলের পোড় খাওয়া আরেক নেতা সফিকুল ই’স’লা’ম শিকদার।
এদিকে কুমিল্লার দুটি রাজনৈতিক পরিবার থেকে দুজন করে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমা দিয়েছেন। তারা হলেন- আঞ্জুম সুলতানা সীমা ও তার ভাই মাসুদ পারভেজ খান এবং সফিকুল ই’স’লা’ম শিকদার ও তার ছোট ভাই কবিরুল ই’স’লা’ম শিকদার।
২০১৭ সালের ৩০ মা’র্চ তিনি কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে পরাজিত হয়েছিলেন আঞ্জুম সুলতানা সীমা। তিনি কুমিল্লা দক্ষিণ জে’লা আওয়ামী লীগের প্রয়াত নেতা আফজাল খানের মে’য়ে। ওই নির্বাচনে জয়ী হন বিএনপির দলীয় প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মো. মনিরুল হক।জানা গেছে, গত ৫ মে থেকে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু হয়। দলীয়ভাবে মনোনয়ন ফরম জমাদানের শেষ দিন ছিল গত বুধবার ১১ মে। এতে ১৪ জন দলীয় মনোনয়ন পেতে আবেদন ফরম জমা দেন।
সূত্র বলছে, ৫ থেকে ১১ মে পর্যন্ত আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে কুসিক নির্বাচনের দলীয় আবেদন ফরম নেন ১৪ জন। তারা হলেন- মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরফানুল হক রিফাত, সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আঞ্জুম সুলতানা ও মো. ওম’র ফারুক, কুমিল্লা দক্ষিণ জে’লা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক সফিকুল ই’স’লা’ম শিকদার, তথ্য ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক নুর উর রহমান মাহমুদ তানিম, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক কবিরুল ই’স’লা’ম শিকদার, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক আনিসুর রহমান মিঠু, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটির সদস্য মাসুদ পারভেজ খান ইম’রান, মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য জাকির হোসেন, কুমিল্লা দক্ষিণ জে’লা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি শ্যামল চন্দ্র ভট্টাচার্য, ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য মাহবুবুর রহমান, চট্টগ্রামের রাউজান উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের সাবেক জিএস (সাধারণ সম্পাদক) কাজী ফারুক আহমেদ, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের উপ-কমিটির সহ-সম্পাদক মো. শাহ’জাহান বিপ্লব ও শফিউর রহমান নামের এক আওয়ামী লীগ সদস্য।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশন (কুসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়ে ১৪ জন দলের কাছে আবেদন করেছেন। তাদের বেশির ভাগই সাবেক ছাত্রনেতা। প্রার্থীদের মধ্যে আলহাজ ওম’র ফারুক, সফিকুল ই’স’লা’ম শিকদার ও নূর উর রহমান মাহমুদ তানিম কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের ছাত্র সংসদের ভিপি ছিলেন। আর মো. জাকির হোসেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের জিএস ছিলেন।
অন্যদিকে আরফানুল হক রিফাত কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের ক্রীড়া ও শরীরচর্চা বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন। বঙ্গবন্ধু ল কলেজের সাবেক ভিপি ও কুমিল্লা দক্ষিণ জে’লা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন আনিসুর রহমান মিঠু।রিটার্নিং কর্মক’র্তার কাছে আগামী ১৭ মে মনোনয়ন ফরম জমাদানের শেষ দিন। ১৫ জুন ইভিএম এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।