কোনো কিছুই নিয়ন্ত্রণে নেই, সরকার চাপাবাজি করছে
দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা শ্রীলঙ্কার চেয়ে ভালো নয় মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন।তিনি বলেন, ‘অর্থনৈতিক দিক দিয়ে বাংলাদেশের যা অবস্থা তার সবটুকু প্রকাশ করা হচ্ছে না।
বিদেশ থেকে যেসব ঋণ নেওয়া হচ্ছে তার তথ্যও প্রকাশ করছে না। এখন পর্যন্ত চাপাবাজি করছে এই সরকার। তারা বলছে, অর্থনীতি ভালো আছে। দুই মাস আগে যে ডলারের দাম ৮২ টাকা ছিল, সেটা এখন ১০২ টাকা। এটা কে নিয়ন্ত্রণ করবে? কোনো কিছুই আসলে নিয়ন্ত্রণে নেই। ’
শনিবার (২১ মে) দুপুর ১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে সাবেক সংসদ সদস্য ও ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি নাসির উদ্দিন আহম্মেদ পিন্টুর ৭ম শাহাদৎ বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সম্মিলিত ছাত্র যুব ফোরাম এ সভা’র আয়োজন করে।
প্রধান অ’তিথির বক্তব্যে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘সরকার কথায় কথায় বলছে- শ্রীলঙ্কার মতো পরিস্থিতি এ দেশে হবে না। শ্রীলঙ্কায় যা ঘটেছে তা হলো পরিবারতন্ত্র এবং স্বৈরশাসন। তারা ১৮ বছর চালিয়েছে। তাদের সে’নাপ্রধান-পু’লিশ কিন্তু সরকারের বাইরে ছিল না। যখন অর্থনৈতিকভাবে শ্রীলঙ্কা সম্পূর্ণধ্বং,স হয়ে গেল তখন মানুষ রাস্তায় নেমেছে। ’
‘তখন সে’নাপ্রধান-পু’লিশ কিন্তু প্রধানমন্ত্রীকে রক্ষা করতে পারেনি। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিকভাবে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার চেয়ে অনেক খা’রা’প অবস্থায় আছে। বাকি আছে মানুষের রাস্তায় নামা। এটার ফয়সালা হবে। ’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়াকে হ’ত্যার হু’মকি দিয়েছেন অ’ভিযোগ করে খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে নাকি ঠুস করে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী যখন কথা বলেন তখন সেটা নির্দেশ। খালেদা জিয়া জনগণের নেত্রী। টুস করে তাকে ফেলে দেওয়ার কথা বলে হ’ত্যার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। সেই নির্দেশ প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। ’
তিনি বলেন, ‘সরকার ক্ষমতায় থেকেও ভালো নেই। তাদের ঘুম হয় না। ঘুম হয় না বলেই গায়ের জো’রে হোক বা অ’বৈ’ধ ভাবে হোক, শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী। তার মুখে অসংলগ্ন, কু’রু’চিপূর্ণ বক্তব্য আসে। যদি আগের রাতে ঘুম হতো তাহলে তিনি এ ধরনের বক্তব্য দিতে পারতেন না। এই কু’রু’চিপূর্ণ বক্তব্য বা নির্দেশের জন্য অনতিবিলম্বে জনগণের কাছে প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত। তা না হলে খালেদা জিয়াকে হ’ত্যার হুকুমকারী, নির্দেশক হিসেবে একদিন এ দেশের জনগণ তার বিচার করবে ‘
নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রসঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বলেন, ‘বিএনপির ঘোষণা করেছে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় থাকলে নির্বাচনে যাবে না। এ কারণে ইসি গঠনের সময় সিলেকশন কমিটির নামে যে নাট’ক হয়েছে সেখানে বিএনপি অংশ নেয়নি। আম’রা জানি না এ কমিশনে কারা রয়েছেন। আম’রা তাদের স্বীকৃতি দেই না। ’
তিনি বলেন, ‘আম’রা যে নির্বাচন চাই সেটি হবে এ দেশে শেখ হাসিনার পদত্যাগ বা পতন, সংসদ বাতিল এবং নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে একটি নির্বাচন। ওই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার যখন একটি নিরপেক্ষ ইসি গঠন করবে তখন আম’রা কথা বলব। বর্তমান ইসির সঙ্গে সংলাপ করা প্রশ্নই আসে না। ’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘কিছুদিন আগে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ছে’লের কাছে একটা সাক্ষাৎকারে বলেছেন- তিনি নাকি আর প্রধানমন্ত্রী হবেন না। যেভাবেই হোক তিনি চারবারের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। কিন্তু জনগণের প্রধানমন্ত্রী হননি। তিনি আসলে বুঝতে পেরেছেন আগামী নির্বাচন পর্যন্ত এ সরকার টিকে থাকতে পারবে না। অ’তএব ইসি গঠন করলেই কী, আর না করলেই বা কী। বিএনপি নতুন ইসিকে দুই পয়সার দাম দেয় না। তাদের সঙ্গে কথা বলার প্রশ্নই ওঠে না। ’
সম্মিলিত ছাত্র যুব ফোরামের আহ্বায়ক নাহিদুল ই’স’লা’মের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল প্রমুখ।