২২ বছর পর দোহার পৌর নির্বাচন, জয়-পরাজয়ে ফ্যাক্টর তাঁতি ভোট
দেশের বহুল আ’লো’চি’ত দোহার পৌরসভা’র নির্বাচন যতই এগিয়ে আসছে ভোটারদের মধ্যে কৌতূহল বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভোটের হিসাব-নিকাশও প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে।চায়ের দোকান, অফিসপাড়া, ক্লাব, হাটবাজার, পথে-ঘাটে এখন একই কথা একই সুর- ২৭ জুলাই নির্বাচনে কে হচ্ছেন মেয়র, কারা হচ্ছেন কাউন্সিলর। এ নিয়ে যু’ক্তি-তর্কের শেষ নেই।
তবে মেয়র পদে জয়-পরাজয়ের ক্ষেত্রে তাঁতি ভোট প্রধান ফ্যাক্টর- এমনটাই মনে করছেন স্থানীয় ভোটার ও নির্বাচন সংশ্লিষ্ট ক’র্তাব্যক্তিরা।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দোহার পৌরসভাটিতে সীমানা জটিলতা নিয়ে মা’ম’লার কারণে দীর্ঘ ২২ বছর পর ২৭ জুলাই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। পৌর নির্বাচনে দলীয় প্রতীক না থাকলেও আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও ই’স’লা’মী শাসনতন্ত্র আ’ন্দোলনের প্রার্থীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।মেয়র পদে ৮ প্রার্থী হলেন- নজরুল ই’স’লা’ম, আলমাস উদ্দিন, জাহাঙ্গীর আলম, আব্দুর রহমান আকন্দ, জামাল উদ্দিন, নুরুল ই’স’লা’ম, ফরহাদ হোসেন ও আমজাদ হোসেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জয়পাড়া পৌর এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, মেয়র পদে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী থাকায় আওয়ামী লীগের ভোট ভাগাভাগি হবে। এক্ষেত্রে তাঁতিদের ১৫ হাজার ভোট যেদিকে গড়াবে মেয়র পদে তিনিই জিতবেন বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে।
অ’পরদিকে নির্বাচনে জয়ী হতে মেয়র প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছেন। সঙ্গে সঙ্গে পৌরবাসীকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকা’ণ্ডের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। নির্বাচিত হলে এসব উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করবেন বলে আগাম জানান দিচ্ছেন ভোটারদের। তাই ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভোট চাওয়ায় বাড়ি বাড়ি উপস্থিত হচ্ছেন মেয়র কাউন্সিলর ও না’রী কাউন্সিলর প্রার্থীরা।
দোহার পৌর নির্বাচনে হেলমেট প্রতীকের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা আওয়ামী লীগ নেতা নজরুল ই’স’লা’ম বাবুল বলেন, পৌরসভা’র উন্নয়ন কার্যক্রমকে গতিশীল করতে ও নাগরিক সেবার মান উন্নয়নের মাধ্যমে জনবান্ধব পৌর প্রশাসন গঠন করতে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।
মোবাইল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জামাল উদ্দিন বলেন, জনগণ দোহার পৌরসভা’র উন্নয়নে সঠিক মেয়র বেছে নিবেন। যার দ্বারা জনগণ ও দোহার পৌরসভা’র উন্নয়ন ও মঙ্গল হবে।অ’পরদিকে আওয়ামী লীগ নেতা পানির জগ প্রতীকের প্রার্থী মো. আলমাস উদ্দিনও দোহার পৌরসভাকে মডেল পৌরসভায় রূপান্তর করতে মেয়র পদে ল’ড়ছেন বলে জানান।
বিএনপি সম’র্থিত প্রার্থী নুরুল ই’স’লা’ম বলেন, আমি একাধিকবার পৌরসভা এলাকায় অন্তর্ভুক্ত সুতারপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছিলাম। দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করায় আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ইস্ত্রি মা’র্কা প্রতীকে নির্বাচন করছি। ভোটাররা তাদের রায় প্রতিফলিত করতে পারলে আমি নিশ্চিত জয়ী হবো বলে আশা করি।
বিএনপি ঢাকা জে’লা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবু আশফাক বলেন, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে না। এটা দলীয় সিদ্ধান্ত। যদি বিএনপির কেউ নির্বাচনে অংশ নেয় সেটা তার নিজস্ব বিষয়।
সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও নারিকেল গাছ প্রতীকের প্রার্থী, আব্দুর রহমান আকন্দ বলেন, জনগণের কল্যাণ ও দোহার পৌর এলাকাকে একটি আধুনিক এলাকায় রূপান্তর করাসহ দোহার পৌরবাসীর পাশে থেকে তাদের জন্য কাজ করতে চাই। আশা করি পৌরবাসী এ বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবেন।
দোহার উপজে’লা নির্বাচন কর্মক’র্তা মো. রেজাউল ই’স’লা’ম বলেন, ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ২৭ জুলাই পৌরসভা’র নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শান্তিপূর্ণভাবেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জে’লা ও উপজে’লাসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মক’র্তারা এ বিষয়ে ব্যাপক সহায়তা করছেন।
তিনি বলেন, এবার দোহার পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৮ জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১২ জন, সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ৬২ জন প্রার্থী অংশগ্রহণ করছেন। পৌরসভা’র মোট ভোটারের সংখ্যা ৪৩ হাজার ৬৬ জন। মোট ভোট কেন্দ্র ২১টি, বুথের সংখ্যা ১৩৪।