বেশির ভাগ অনৈতিক ও অমানবিক কর্মকাণ্ডের সূচনা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছিল

বেশির ভাগ অনৈতিক ও অমানবিক কর্মকাণ্ডের সূচনা আওয়ামী লীগের আমলেই হয়েছিল
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার : চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, বাংলাদেশের বেশির ভাগ অনৈতিক ও অমানবিক কর্মকাণ্ডের সূচনা আওয়ামী লীগের প্রথম আমলেই হয়েছিল। তিনি বলেন, “বাংলাদেশে যত খারাপ কাজ, শয়তানি কাজ, সবকিছুর শুরু ১৯৭৩ সালের আওয়ামী লীগ আমল থেকে। বাকিরা শুধু সেই ধারাবাহিকতাকে বহন করেছে।”

অধ্যাপক আসিফ নজরুলের মতে, প্রশাসন ও রাজনীতিতে ‘আমার লোক, তোমার লোক’ সংস্কৃতি দেশজুড়ে গভীরভাবে প্রোথিত। এই সংস্কৃতি থেকে মুক্ত না হলে গণতান্ত্রিক কাঠামো শক্তিশালী হবে না বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি ও অন্যান্য ছোট দলগুলোকেও একই সংস্কৃতি থেকে মুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আওয়ামী লীগ আমলে এই দলীয়করণ ও পক্ষপাতের সংস্কৃতি ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছেছিল। তিনি অভিযোগ করেন, গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, হেফাজতে নির্যাতন ও মৃত্যু, ভুয়া নির্বাচন এবং প্রশাসনের দলীয়করণ, সবকিছুর সূচনা সেই সময়েই হয়। নাগরিক সমাজেও এই সংস্কৃতির প্রভাব পড়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ আক্রান্ত হওয়ার পর কোনো প্রতিবাদ না হওয়া তার প্রমাণ।”

অধ্যাপক আসিফ নজরুল আরও বলেন, তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় বাহিনী, বিশেষ করে পুলিশকে একটি “নির্মম, অত্যাচারী ও দানবীয় বাহিনীতে” পরিণত করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, রাজনৈতিক নির্দেশে এবং ব্যক্তিগত স্বার্থে অনেক পুলিশ সদস্য নির্যাতন চালাতেন। প্রাতিষ্ঠানিক সীমাবদ্ধতা ও ফরেনসিক সুবিধার অভাবকেও তিনি নির্যাতনের একটি কারণ হিসেবে উল্লেখ করেন।

পুলিশ সংস্কারের বিষয়ে আইন উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ফৌজদারি কার্যবিধিতে সংশোধন এনে ১২ ঘণ্টার মধ্যে আটক ব্যক্তির স্বজনদের অবহিত করার বিধান এবং গুমসংক্রান্ত আইনে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তথ্য জানানো বাধ্যতামূলক করা। এসব না মানলে ঘটনাকে গুম হিসেবে গণ্য করা হবে।

তবে তিনি স্বীকার করেন, পুলিশ সংস্কার কমিশনের ক্ষমতা সীমিত। তবুও ক্ষমতা থাকলেই মানবাধিকার রক্ষায় কার্যকরতা নিশ্চিত হয় না বলে মত দেন তিনি। অধ্যাপক আসিফ নজরুল পুলিশের সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। তাঁর ভাষায়, “আমাদের এমন একটি সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে, যেখানে দায়িত্ব হবে সেবামূলক, আনুষ্ঠানিক প্রদর্শনের জন্য নয়।”

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ