নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ‘ঢাকা লকডাউন’ ঠেকাতে প্রস্তুত পুলিশ-সেনাবাহিনী-বিজিবি
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বাংলাদেশে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘ঢাকা লকডাউন’ কর্মসূচি ঘিরে রাজধানী ঢাকায় কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণের ঘোষণা দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। আগামী বৃহস্পতিবার (১৩ নভেম্বর) দলটির এই কর্মসূচি কেন্দ্র করে সম্ভাব্য সহিংসতা ও নাশকতা ঠেকাতে রাজধানীজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রস্তুতি চলছে। পুলিশের দাবি, সাম্প্রতিক সময়ে ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ও বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনাগুলো আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সাথে সম্পৃক্ত। তবে দলটির নেতারা এ অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা অভিযোগ করেছেন যে, সরকারই পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করতে এসব ঘটনার মদদ দিচ্ছে।
পুলিশ কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী জানিয়েছেন, গত ১১ দিনে রাজধানীতে ১৭টি ককটেল বিস্ফোরণ এবং ৯টি যানবাহনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। তিনি বলেন, “১৩ নভেম্বর নিয়ে জনমনে কোনো আতঙ্কের কারণ নেই। আমরা সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করছি। সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ ও অন্যান্য বাহিনী সমন্বিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।” স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও আইনশৃঙ্খলাসংক্রান্ত কোর কমিটির বৈঠকে সংশ্লিষ্ট বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের বিদেশে অবস্থানরত নেতা আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এবং দলটির মুখপাত্র মোহাম্মদ আলী আরাফাত বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ‘ভুয়া ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রায়’ ঠেকাতেই তারা ‘লকডাউন’ কর্মসূচি পালন করবেন। তারা দাবি করেছেন, “সরকারের প্রশ্রয়ে থাকা সাম্প্রদায়িক শক্তিগুলো আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে সহিংসতা সৃষ্টি করছে।” দলটির মুখপাত্র আরাফাত বলেন, “আওয়ামী লীগ শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন করবে, ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করা হবে গণমানুষের প্রতীকী প্রতিবাদের অংশ হিসেবে।”
উল্লেখ্য, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার রায় ঘোষণার তারিখ বৃহস্পতিবার নির্ধারণ করবে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়কে কেন্দ্র করে রাজধানী ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। সরকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগের তৎপরতা দমন করা হবে কঠোরভাবে।
এরই মধ্যে ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় টহল বাড়ানো হয়েছে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। বিজিবি ও পুলিশের যৌথ অভিযান চলমান রয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার কার্যালয়ের সামনেও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানিয়েছেন, “সরকার সতর্ক অবস্থানে আছে; কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সহ্য করা হবে না।”
বর্তমানে রাজধানীজুড়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে উদ্বেগ থাকলেও প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে যে ১৩ নভেম্বর কোনো ধরনের অস্থিতিশীলতা ঘটতে দেওয়া হবে না। সব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে, এবং প্রয়োজনে আরও বাহিনী মোতায়েন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছে ডিএমপি।
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি বাংলা
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।