বেহুলার বাসরঘর: ইতিহাস-ঐতিহ্যে ভরপুর রহস্যময় গোকুল মেধ
- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বগুড়ার মহাস্থানগড় থেকে অল্প দূরত্বে গোকুল গ্রামে অবস্থিত ‘গোকুল মেধ’ বা ‘লখিন্দরের মেধ’। তবে জনমনে এটি বেশি পরিচিত ‘বেহুলার বাসরঘর’ নামে। বহু ইতিহাস, মিথ ও প্রত্নতাত্ত্বিক রহস্য জড়িয়ে আছে এই প্রাচীন স্থাপনাকে ঘিরে।
ঐতিহাসিক ধারণা মতে, সপ্তম থেকে দ্বাদশ খ্রিষ্টাব্দের কোনো এক সময়ে মন্দির-ধাঁচের এই স্থাপনা নির্মিত হয়। স্থানীয় লোককথায় প্রচলিত আছে-মনসামঙ্গলের কিংবদন্তির চরিত্র বেহুলা ও লখিন্দর নাকি এখানেই তাঁদের বাসররাত কাটিয়েছিলেন। সেই কারণে এই স্থাপনাটি আজও রোমাঞ্চ, রহস্য ও লোকবিশ্বাসের অন্যতম কেন্দ্র।
তবে গবেষকদের মতে, বেহুলা-লখিন্দরের গল্পটি মূলত লোকমিথ। পরিব্রাজক হিউয়েন সাঙ এবং ইবনে বতুতার ভ্রমণকাহিনি বলছে ভিন্ন কথা। তাঁদের লেখা থেকে জানা যায়-এখানে ছিল একটি বৌদ্ধমঠ, যা ধর্মীয় শিক্ষাকেন্দ্র ও ধ্যানস্থলের ভূমিকা পালন করত। পরবর্তীতে মঠটির ধ্বংসাবশেষ ধীরে ধীরে মাটির নিচে চাপা পড়ে যায় এবং স্থানীয় ইতিহাসে কিংবদন্তির সঙ্গে মিলিয়ে নতুন পরিচয় পায়।
বর্তমানে সবুজ ঘাসে ঢাকা ঢিবির ওপর গড়ে ওঠা ইটের কারুকার্যমণ্ডিত এই প্রত্নস্থল পর্যটকদের কাছে অন্যতম আকর্ষণ। বছরের সব সময়ই দেশ-বিদেশের দর্শনার্থীদের ভিড়ে সরগরম থাকে স্থানটি। অনেকে এখানে আসেন ইতিহাস জানতে, কেউ আবার প্রকৃতির রূপ ও শান্ত পরিবেশ উপভোগ করতে।
বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর দীর্ঘদিন ধরে গোকুল মেধ সংরক্ষণ ও গবেষণার কাজে নিয়োজিত। প্রত্নতাত্ত্বিকদের মতে, স্থানটি সঠিকভাবে সংরক্ষণ ও প্রচার পেলে আন্তর্জাতিক পর্যটনেও গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করতে পারবে গোকুল মেধ।
প্রাচীন ইতিহাস, রহস্যময় লোককথা ও প্রকৃতির সৌন্দর্য-সবকিছুর মিলনস্থল ‘বেহুলার বাসরঘর’ আজও পর্যটকদের মুগ্ধ করে চলেছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।