রাতে ঘুম আসে না? আধুনিক জীবনের ব্যস্ততায় ঘুমহীনতা এখন নিত্যসঙ্গী, সমাধান জানুন

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
দিনভর ক্লান্তির পর রাতের বেলায় আরামদায়ক ঘুম প্রত্যেক মানুষের শরীর ও মনের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কিন্তু বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা—শত চেষ্টা সত্ত্বেও অনেকেই রাতভর বিছানায় গড়াগড়ি করেন ঘুমের অপেক্ষায়। আধুনিক শহরজীবনের উদ্বেগ, ডিভাইসের অতিরিক্ত ব্যবহার, এবং অনিয়মিত জীবনযাত্রার প্রভাবে ঘুমের এই সমস্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে।
কেন ঘুম আসে না?
বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতের ঘুমের সমস্যার পেছনে কিছু প্রধান কারণ হলো:
১। স্ক্রিন টাইমের আধিক্য: স্মার্টফোন, ট্যাবলেট বা ল্যাপটপের আলো মেলাটোনিন হরমোনের উৎপাদনে বিঘ্ন ঘটায়, যা ঘুমের স্বাভাবিক চক্রকে ব্যাহত করে।
২। চিন্তা ও মানসিক চাপ: দিনশেষেও যদি মাথা থেকে কাজ, সম্পর্ক বা আর্থিক চিন্তা না কাটে, তবে মস্তিষ্ক বিশ্রাম নিতে পারে না।
৩। অনিয়মিত ঘুমের রুটিন: ঘুমাতে যাওয়ার এবং জাগার নির্দিষ্ট সময় না থাকলে দেহের অভ্যন্তরীণ ঘড়ি বিভ্রান্ত হয়।
➤ কী করা যেতে পারে? — কার্যকরী কিছু অভ্যাস
ঘুমের সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে বড় কোনো চিকিৎসা নয়, বরং কিছু সহজ কিন্তু নিয়মিত অভ্যাস গড়ে তুললেই মিলতে পারে ফল।
☞ ঘুমের নির্দিষ্ট সময় ঠিক করুন প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠা শরীরকে অভ্যস্ত করে তোলে, যা নিদ্রার গুণগত মান উন্নত করে।
☞ ঘুমের আগে স্ক্রিন থেকে দূরে থাকুন ঘুমানোর অন্তত এক ঘণ্টা আগে ফোন বা ল্যাপটপ বন্ধ রাখুন। চাইলে সেই সময়টিতে বই পড়া বা ধ্যান করুন।
☞ ক্যাফেইন ও ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন রাতে চা, কফি, চকলেট বা মসলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন। এগুলো ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে।
☞ হালকা ব্যায়াম করুন প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটা বা ইয়োগার অভ্যাস ঘুমের মান ভালো করতে পারে। তবে ঘুমের ঠিক আগে ব্যায়াম না করাই ভালো।
☞ শোবার ঘরের পরিবেশ গুছিয়ে নিন ঘর অন্ধকার, নীরব ও ঠান্ডা রাখলে ঘুম দ্রুত আসে। চাইলে হালকা সুগন্ধি বা ঘুমের জন্য তৈরি অ্যাম্বিয়েন্ট সাউন্ডও ব্যবহার করতে পারেন।
➤ ঘুম না এলে রাতটা কীভাবে কাটাচ্ছেন?
বিছানায় শুয়ে মোবাইল স্ক্রল করে সময় পার করা কিন্তু সবচেয়ে ক্ষতিকর অভ্যাসগুলোর একটি। ঘুম না এলে উঠে বসে চোখ বন্ধ করে গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন বা ধ্যান করার চেষ্টা করুন। অনেক সময় অল্প সময়ের মধ্যেই ঘুম চলে আসে।
- ঘুম শুধু বিশ্রামের জন্য নয়, শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা থেকে শুরু করে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা পর্যন্ত নির্ভর করে এই নিয়মিত বিশ্রামের উপর। তাই রাতের ঘুমের বিষয়ে অবহেলা নয়—আজই থেকে শুরু হোক কিছু প্রয়োজনীয় অভ্যাস গড়ে তোলার যাত্রা।
ঘুম যদি দীর্ঘদিন অনিয়মিত থাকে, তবে অবশ্যই পরামর্শ নিতে হবে প্রফেশনাল হেলথ কনসালটেন্টদের কাছ থেকে। কেননা, ঘুমহীনতা শুধু ক্লান্তি নয়, সময়ের সাথে হয়ে উঠতে পারে উচ্চ রক্তচাপ, ডিপ্রেশন বা হৃদরোগের নীরব সহযাত্রী।