মাথা ব্যথা কমাতে আপেল ও লবণের যুগলবন্দি: বাস্তবেই কতটা উপকারী?

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
প্রচণ্ড মাথা ব্যথার সময় আমরা প্রায়শই ওষুধের দিকে ঝুঁকে পড়ি। কিন্তু কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি কখনও কখনও তাৎক্ষণিক আরাম দিতে পারে, তাও কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই। সাম্প্রতিক সময়ে অনেকেই বলছেন, লবণ ছিটিয়ে খাওয়া আপেল নাকি মাথা ব্যথা কমাতে সহায়তা করে। এই দাবিটি অনেকের কাছেই আকর্ষণীয় ও নতুন মনে হলেও, এর পেছনে কিছু বাস্তবিক যুক্তিও রয়েছে।
আপেল: একটি প্রাকৃতিক "হাইড্রেশন বুস্টার"
আপেলে রয়েছে প্রাকৃতিক চিনি (ফ্রুক্টোজ), অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, পটাশিয়াম এবং পর্যাপ্ত পানি—যা শরীরে তরল ও খনিজের ঘাটতি পূরণে সাহায্য করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক সময় মাথা ব্যথা সৃষ্টি হয় ডিহাইড্রেশন, অনিদ্রা, দীর্ঘক্ষণ খালি পেটে থাকা বা শরীর দুর্বল হয়ে পড়ার কারণে। এই অবস্থায় আপেল খেলে কিছুটা উপশম আসতে পারে।
আর যদি তার সঙ্গে সামান্য লবণ যোগ করা হয়, তাহলে শরীরের ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্সও পুনরুদ্ধার হতে পারে—যা সোডিয়াম ঘাটতির কারণে হওয়া মাথা ব্যথায় কার্যকর হতে পারে।
কিভাবে খাবেন?
একটি টাটকা আপেল পাতলা করে কেটে তার ওপর এক চিমটি লবণ ছিটিয়ে ধীরে ধীরে চিবিয়ে খেতে হবে। অনেকেই জানান, এভাবে খাওয়ার পর প্রায় ১৫–৩০ মিনিটের মধ্যেই মাথা কিছুটা হালকা লাগে।
তবে সবার জন্য সমান কার্যকর নয়
বিশেষজ্ঞ বিশ্লেষণে উঠে এসেছে—এই পদ্ধতিটি মূলত কার্যকর ডিহাইড্রেশন, ক্লান্তি বা খালি পেটজনিত মাথা ব্যথায়। কিন্তু যদি মাথা ব্যথার পেছনে কারণ হয়-
১। মাইগ্রেন
২। চোখের চাপ
৩। সাইনাস ইনফেকশন
৪। উচ্চ রক্তচাপ
- তাহলে আপেল বা লবণ তেমন উপকার দেবে না, বরং সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে। এমন ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়।
ওষুধের চেয়ে প্রাকৃতিক সমাধান?
বর্তমানে অনেকেই প্রাথমিক ব্যথা বা অস্বস্তির সময় ওষুধ এড়িয়ে প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপায়ে স্বস্তি খোঁজেন। এই প্রবণতার পেছনে অন্যতম কারণ হলো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার আশঙ্কা। সেই দিক থেকে আপেল একটি নিরাপদ, সহজলভ্য এবং পুষ্টিকর বিকল্প—যা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই শরীরকে আরাম দিতে পারে।
সতর্কতাও দরকার
উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনি রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত লবণ গ্রহণ ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। তাই যেকোনো ঘরোয়া উপায় মেনে চলার আগে নিজের শরীরের অবস্থান বুঝে নেওয়া জরুরি।
লবণ ছিটানো আপেল কোনো "জাদুর টোটকা" নয়—তবে কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এটি একটি সহজ, স্বাস্থ্যসম্মত এবং বাস্তবসম্মত সমাধান হতে পারে। মাথা ব্যথা যদি সাময়িক এবং হালকা হয়, তবে এই পদ্ধতি চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে। তবে দীর্ঘস্থায়ী বা জটিল মাথা ব্যথায় দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।