বই: বিনোদনের মাধ্যম না জীবনের সাফল্যের চাবিকাঠি?

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আধুনিক ডিজিটাল যুগে যখন মোবাইল, ট্যাবলেট আর সোশ্যাল মিডিয়া ঘিরে মানুষের সময় কাটে, তখনও বইয়ের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা কমেনি। বরং বই আজও মানুষের জীবনে এক অপরিহার্য শিক্ষকের মতো, যা শুধুমাত্র বিনোদন নয়, জীবনের নানা দিক থেকে সফল হওয়ার মূলমন্ত্রও শেখায়।
বই থেকে শেখার গল্প ও বাস্তব জীবনের সাফল্যের মধ্যে গভীর সম্পর্ক রয়েছে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত বই পড়ে তাদের সমস্যা সমাধানে দক্ষতা, চিন্তাশক্তি ও মনোযোগ অন্যদের তুলনায় অনেক বেশি। শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞান নয়, বই জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে কাজ করে। বিখ্যাত বিজ্ঞান, ব্যবসা ও আত্মউন্নয়ন বিষয়ক বইয়ের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ মানুষ তাদের জীবনে নতুন পথ তৈরি করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, নিয়মিত বই পড়া মানুষের সৃজনশীলতা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। একজন সফল উদ্যোক্তা বা বিজ্ঞানীর জীবনী থেকে আমরা দেখতে পাই, বই তাদের মেধা ও মনোভাব বিকাশের শক্তিশালী মাধ্যম। উদাহরণস্বরূপ, স্টিভ জবস এবং বিল গেটসের মতো নেতারা বই পড়ার মাধ্যমে জ্ঞান সংগ্রহ করে প্রযুক্তি ও ব্যবসায় বিপ্লব ঘটিয়েছেন।
বাংলাদেশেও শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পাঠাগার বিভাগ বই পড়ার সংস্কৃতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সরকারি ও বেসরকারি পাঠাগার, অনলাইন বই উৎসব, এবং ডিজিটাল রিডিং প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে তরুণ সমাজকে বইয়ের সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা চলছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য নয়, বইকে জীবনের মন্ত্র হিসেবে মেনে চললে তা মানুষের চিন্তাভাবনা, মূল্যবোধ ও নেতৃত্বগুণ উন্নত করে।
অতীত থেকে বর্তমান পর্যন্ত বই মানুষের জীবন পরিবর্তনের এক অভেদ্য মাধ্যম হিসেবে কাজ করে এসেছে। আজকের প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে প্রযুক্তির পাশাপাশি বইয়ের জ্ঞানই ব্যক্তি ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যায়। তাই বইকে শুধু সময় কাটানোর মাধ্যম নয়, বরং জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার এক শক্তিশালী হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করা আবশ্যক।
সুতরাং, বই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, জীবনকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও সফলতার পথে পরিচালিত করুন। বইয়ের প্রতিটি পাতা হবে আপনার জীবনের এক নতুন অধ্যায়, যা আপনাকে বাস্তব জগতের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় প্রস্তুত করবে।