নগদের ২০০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ, পুরোনো ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
মোবাইল আর্থিক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান নগদের প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রতিষ্ঠানটির পুরোনো ম্যানেজমেন্টের বিরুদ্ধে আইনি লড়াইয়ে নেমেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এই তথ্য জানান। আজ সোমবার (১৯ মে) রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নগদের আগের ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির আওতায় নগদ প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে বিতরণের জন্য আসা প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব এবং আন্তর্জাতিক নিরীক্ষায় উঠে এসেছে।
গভর্নর আরও জানান, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক নগদের নিয়ন্ত্রণে প্রশাসক নিয়োগ করেছিল। তবে সম্প্রতি পুরোনো ম্যানেজমেন্ট আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুনরায় নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। এই বিষয়ে আদালতে আপিল করা হয়েছে এবং শিগগিরই শুনানির তারিখ নির্ধারিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
আহসান এইচ মনসুর স্পষ্ট ভাষায় বলেন, "নগদের যারা অরিজিনাল ম্যানেজমেন্ট ছিল, বোর্ড ছিল তারা অর্থনৈতিক দুর্নীতি করে টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমরা জানি ৬৫০ কোটি টাকা তারা ই-মানি ক্রিয়েট করেছে, যেটা আসলে প্রকৃত অর্থ ছিল না। সরকারের দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচির আওতায় যেসব টাকা ট্রান্সফার করা হতো সেগুলো নগদের মাধ্যমে করা হতো। সেখানে তারা প্রায় দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে আত্মসাৎ করেছে।"
কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্নতা প্রকাশ করে জানিয়েছে, পুরোনো ম্যানেজমেন্ট পুনরায় নিয়ন্ত্রণ পাওয়ায় সিস্টেমের ওপর তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হবে এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে তদারকি করা কঠিন হয়ে পড়বে।
তবে গভর্নর ব্যাংকগুলোকে আশ্বস্ত করে বলেন, এই সময়ে নগদের মাধ্যমে যেন নতুন করে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি না হয়, সে বিষয়ে ব্যাংকগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। বর্তমানে নগদ শুধুমাত্র ক্যাশ ইন ও সেন্ড মানির কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে।
আশঙ্কা প্রকাশ করে ড. মনসুর বলেন, পুরোনো ম্যানেজমেন্ট তাদের ডাটাবেজ মুছে ফেলার চেষ্টা করতে পারে, যা পরবর্তীতে আইনি প্রক্রিয়াকে আরও জটিল করে তুলবে।
সংবাদ সম্মেলনে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা নিয়ে আয়োজিত বৈঠকের বিষয়েও কথা বলেন গভর্নর। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ ব্রিফিংয়ে আরও উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলাম।