গবেষণায় দেখা গেছে, কিছু নির্দিষ্ট ইনডোর গাছ—যেমন স্পাইডার প্ল্যান্ট, স্নেক প্ল্যান্ট, ও পিস লিলি—কার্বন মনোক্সাইড, বেনজিন, ফরম্যালডিহাইডের মতো ক্ষতিকর উপাদান শোষণ করে। এদের যত্ন করতে হলে বুঝতে হবে তাদের 'লাইফ সাইকেল' ও প্রয়োজন।
 

কীভাবে রাখবেন ইনডোর গাছকে স্বাস্থ্যবান?

☞ আলো ও স্থান: সব গাছ আলো ভালোবাসে, তবে সব আলো সমান নয়। মধ্য-আলো বা পরোক্ষ আলোতে ভালো জন্মানো গাছ নির্বাচন করুন। সোজাসুজি রোদে রাখলে পাতায় পোড়া দাগ পড়তে পারে।

☞ পানি দেওয়ার বিজ্ঞান: বেশি পানি দেওয়া ইনডোর প্ল্যান্টের শত্রু। মাটি স্পর্শ করে যদি শুকনো মনে হয়, তবেই পানি দিন। ওভারওয়াটারিং গাছের মূল পচিয়ে ফেলতে পারে।

☞ নির্বীজন ও ছাঁটাই: প্রতি মাসে পাতায় ধুলা জমলে হালকা ভেজা কাপড়ে মুছে দিন। ছাঁটাই গাছকে নতুন ডাল গজাতে সহায়তা করে। পোকামাকড় বা ছত্রাক দেখা দিলে প্রাকৃতিক উপায়ে প্রতিকার নিন—যেমন নিম তেল স্প্রে।

☞ পাত্র ও মাটি: ছিদ্রযুক্ত টব ব্যবহার করুন যাতে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যেতে পারে। ক্যাকটাস বা সাক্যুলেন্টের জন্য বালুকাময় মাটি, আর অন্যান্য গাছের জন্য হালকা দোআঁশ মাটি উপযুক্ত।

মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলছে

ইনডোর প্ল্যান্ট কেবলমাত্র ঘরের দৃষ্টিনন্দনতা বাড়ায় না, বরং গবেষণায় জানা গেছে, এটি স্ট্রেস হরমোন 'করটিসল'-এর মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। অফিস ডেস্কে বা শোবার ঘরে ইনডোর গাছ রাখলে মনোযোগ বৃদ্ধির পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তি পাওয়া যায়।

ইনডোর গাছ মানেই দায়িত্ব

যে গাছ আপনি ঘরে এনেছেন, তার জন্য আপনাকে হতে হবে একজন অভিভাবক। একটি গাছের প্রাণও আপনার যত্নের উপর নির্ভর করে। শীতকালে পানি কম দিন, গ্রীষ্মে মাটি নজরে রাখুন, আর বর্ষায় অতিরিক্ত আর্দ্রতা রোধে বায়ু চলাচলের ব্যবস্থা রাখুন।
 

একটি ইনডোর গাছ মানে শুধু একটি সবুজ পাত্র নয়—এটি একটি জীবন্ত প্রক্রিয়া, যা আপনাকে নিঃশ্বাসে বিশুদ্ধতা, চেতনায় প্রশান্তি এবং জীবনে ভারসাম্য এনে দিতে পারে। সঠিক যত্নে আপনি হয়ে উঠতে পারেন নিজ ঘরের একজন প্রকৃতি-রক্ষক।