Google Pay একটি ডিজিটাল পেমেন্ট প্ল্যাটফর্ম, যার মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা অনলাইনে অর্থ পাঠাতে ও গ্রহণ করতে পারেন, বিল পরিশোধ করতে পারেন এবং বিভিন্ন মার্চেন্টে পেমেন্ট করতে পারেন। ফ্রিল্যান্সার, অনলাইন ব্যবসায়ী কিংবা আন্তর্জাতিক লেনদেনকারীদের জন্য এটি একটি কার্যকর সমাধান। 

অন্যদিকে, Google Wallet হলো একটি ডিজিটাল ওয়ালেট অ্যাপ, যা মূলত আপনার ব্যাংক কার্ড, লয়্যালটি কার্ড, ট্রানজিট পাস বা আইডি কার্ড ডিজিটালি সংরক্ষণের কাজ করে। কিছু নির্দিষ্ট দেশে এই Wallet দিয়েই NFC-এর মাধ্যমে ফোন ছুঁয়ে পেমেন্ট করা যায়। এই অ্যাপের মাধ্যমে আপনি আপনার লোকাল ব্যাংকের কার্ড ডিজিটালি সংরক্ষণ করতে পারবেন, এবং যদি আপনার ফোনে NFC ফিচার থাকে, তাহলে নির্দিষ্ট দোকানে পেমেন্ট করাও সম্ভব হতে পারে।

বাংলাদেশে Google Wallet চালু হলে, এটি নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো দিতে পারে:
১. একই ফোনে একাধিক কার্ড রাখা যাবে, তাই ফিজিক্যাল কার্ড বহনের প্রয়োজন কমবে।
২. QR কোড বা NFC দিয়ে দ্রুত পেমেন্ট করার সুযোগ থাকবে নির্দিষ্ট স্থানে।
৩. ব্যাংক ও মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিস (MFS)–এর সাথে ভবিষ্যতে ইন্টিগ্রেশন সম্ভব হলে, অনেকটাই স্মার্ট পেমেন্ট ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

তবে Google Wallet টাকা পাঠানোর সিস্টেম নয়। বিকাশ বা নগদের মতো ট্রান্সফার সেবা এতে নেই। সব ব্যাংক বা কার্ড Google Wallet-এর সাথে কাজ নাও করতে পারে—প্রথমদিকে সীমিত কিছু কার্ডই অ্যাড করার সুযোগ থাকবে। NFC ভিত্তিক পেমেন্ট এখনও বাংলাদেশের অনেক দোকানে চালু হয়নি, তাই এই ফিচার হয়তো তেমন কাজে আসবে না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, Google Wallet আসা নিঃসন্দেহে একটি ভালো পদক্ষেপ, তবে এটিকে Google Pay বা PayPal-এর বিকল্প ভেবে ফেলা একটি বড় ভুল। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার এখনো নিয়ন্ত্রিত, এবং এই সীমাবদ্ধতা থেকেই যাচ্ছে। তবে ভবিষ্যতের জন্য এটি একটি পজিটিভ ইনফ্রাস্ট্রাকচার হতে পারে, যেখানে একদিন আন্তর্জাতিক পেমেন্ট অ্যাপগুলোর সাথে স্থানীয় ব্যাংকিং সিস্টেম একীভূত হতে পারবে।

Google Wallet একটি স্মার্ট ফিচার, তবে এটি আপাতত শুধু ডিজিটাল কার্ড ম্যানেজমেন্টের জন্য কার্যকর। Google Pay-এর মতো লেনদেনের সুবিধা এখান থেকে প্রত্যাশা করলে হতাশ হতে হবে। সুতরাং, ভুল তথ্য ও বিভ্রান্তি থেকে সাবধান থাকুন—তথ্য যাচাই করে প্রযুক্তি ব্যবহার করুন।