গাজার রাফায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ২৭, আহত শতাধিক

গাজার রাফায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ২৭, আহত শতাধিক
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে আজ মঙ্গলবার গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর রাফায় ত্রাণ নিতে আসা অন্তত ২৭ জন ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্থানীয় প্রশাসন ও বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর্মীদের বরাতে এই তথ্য জানা গেছে।

ঘটনাটি ঘটে রাফার পশ্চিমাঞ্চলের আল-আলম চত্বরে, যেখানে একটি ত্রাণ বিতরণকেন্দ্র থেকে মাত্র এক কিলোমিটার দূরে মানুষজন সারিবদ্ধভাবে ত্রাণের অপেক্ষায় ছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শী ও উদ্ধারকর্মীরা জানিয়েছেন, ট্যাংক, ড্রোন ও হেলিকপ্টার থেকে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ চালানো হয় বেসামরিক নাগরিকদের ওপর।

নাসের হাসপাতালের পরিচালক আতেফ আল-হাউত বলেন, “আমরা সকালে ২৪টি মৃতদেহ ও ৩৭ জন আহতকে পেয়েছি, যাদের সবার শরীরে গুলির চিহ্ন ছিল।”

অন্যদিকে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) দাবি করেছে, তাদের সেনাদের দিকে সন্দেহভাজন কিছু ব্যক্তি অগ্রসর হলে সতর্কতামূলক গুলি চালানো হয়।

তবে আন্তর্জাতিক মানবিক সংস্থাগুলো এই ঘটনার কড়া সমালোচনা করেছে। বিশেষ করে, যেভাবে নতুন ত্রাণ বিতরণ ব্যবস্থা পরিচালিত হচ্ছে, তা মানবিক নীতিমালার লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছে জাতিসংঘসহ একাধিক সংস্থা।

বর্তমানে ত্রাণ বিতরণের দায়িত্বে রয়েছে ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’, যেটি ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থনপুষ্ট। এই ব্যবস্থায় বেসামরিক লোকদের সেনা নিয়ন্ত্রণাধীন বিতরণকেন্দ্রে যেতে হয়, যেখানে রয়েছে সশস্ত্র নিরাপত্তা টহল। ফলে ত্রাণ নিতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে পড়তে হচ্ছে প্রাণঘাতী বিপদের মুখে।

একজন বিদেশি চিকিৎসক জানান, “রাত ৩টা ৪৮ মিনিটের পর থেকে হাসপাতাল যেন রণক্ষেত্র হয়ে গেছে। আমরা হতাহতদের সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছি।”

জাতিসংঘ পূর্বের ব্যবস্থা অনুযায়ী, ত্রাণ সরাসরি স্থানীয় ৪০০টি কেন্দ্রে বিতরণ করত, যেখানে তালিকা অনুসারে সবার জন্য খাদ্য নিশ্চিত হতো। কিন্তু বর্তমানে "আগে এলে আগে পাবে" নীতিতে সারা রাত লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।

এই ট্র্যাজেডির প্রেক্ষাপটে আবারও সামনে এসেছে প্রশ্ন—গাজায় চলমান সংকট আদৌ মানবিক পথে সমাধান করা সম্ভব কিনা।


সম্পর্কিত নিউজ