কুরবানি ও সংহতি: দরিদ্রের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ঈদুল আজহা মুসলমানদের জন্য এক মহান উৎসব। এটি শুধু ধর্মীয় গুরুত্বের দিক থেকে নয়, সমাজের জন্যও এক বিশেষ বার্তা নিয়ে আসে। কুরবানি শুধুমাত্র পশু জবাইয়ের বিষয় নয়; এটি মানবিক মূল্যবোধ, সহানুভূতি এবং দরিদ্রের পাশে দাঁড়ানোর এক অনন্য সুযোগ। ইসলাম ধর্মে কুরবানির মাধ্যমে সমাজের প্রতিটি সদস্যের মধ্যে সহমর্মিতা, সহানুভূতি এবং দানশীলতার এক দুর্দান্ত বার্তা প্রতিফলিত হয়।
কুরবানি ও দরিদ্রদের সহানুভূতি
কুরবানি ইসলামে দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতির পরিচায়ক হিসেবে রয়েছে। ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, কুরবানি শুধু একজন ব্যক্তির জন্য নয়, এটি পুরো সমাজের জন্য।
রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনেও কুরবানি ছিলো এক অনন্য দৃষ্টান্ত, যেখানে তিনি নিজের কুরবানি দিয়ে শুধু নিজেকে নয়, তাঁর পরিবার ও দরিদ্রদেরও উপকৃত করেছেন। হাদিসে এসেছে:
"রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি ভেড়া কুরবানি দিতেন, একটি নিজের জন্য, আর অপরটি তাঁর উম্মতের জন্য।" - [বুখারি: ৫৫৫৩]
এটি প্রমাণ করে যে কুরবানির মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র শ্রেণীও উপকৃত হয়, এবং তাদেরকে ঈদের আনন্দে শামিল করা হয়।
সোশ্যাল সলিডারিটি: কুরবানি দিয়ে সমাজে সংহতি সৃষ্টি
কুরবানির পশুর গোশত বিতরণ শুধু দরিদ্রদের জন্য খাদ্য সরবরাহই নয়, বরং এটি সমাজে সংহতি এবং একতা সৃষ্টি করে। ইসলাম, ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে, সমাজে সামাজিক বৈষম্য দূর করতে উৎসাহিত করে। এটি একটি সামাজিক আন্দোলন, যা সমগ্র উম্মাহর মধ্যে ভাইচারা ও সহমর্মিতা বৃদ্ধি করে।
অন্যথায়, ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী, কুরবানি শুধুমাত্র এক ব্যক্তির জন্য নয়, এটি পুরো সমাজের জন্য। রাসুলুল্লাহ (সা.) তার কুরবানি দিয়ে শুধু নিজেকে নয়, তার পরিবারের সদস্যদের, প্রতিবেশী এবং দরিদ্রদেরও উপকৃত করেছেন। একটি হাদিসে এসেছে:
"রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি ভেড়া কুরবানি দিতেন, একটি নিজের জন্য, আর অপরটি তাঁর উম্মতের জন্য।" - [বুখারি: ৫৫৫৩]
কুরবানির মাধ্যমে সামাজিক দায়িত্ব পালন
কুরবানি মুসলমানদের কাছে একটি সমাজের দায়িত্বের অংশ। এটি আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং দরিদ্রদের প্রতি সহানুভূতির চিত্র। ইসলামে কুরবানির গোশত গরিবদের মধ্যে বিতরণের গুরুত্ব অনেক বেশি। এই মাধ্যমে মানুষের মধ্যে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া এবং সবার জন্য সচ্ছলতা ও সম্মান বয়ে আনা হয়।
কুরবানির গোশত পেতে গরিব, এতিম ও অসহায় ব্যক্তিরা পেয়ে থাকেন সেই সুযোগ, যা অন্য সময়ে সম্ভব হয় না। ইসলামে কুরবানির একটি মূল উদ্দেশ্য হলো, সমাজের দরিদ্র শ্রেণীর মধ্যে বিতরণ করে, তাদের জন্য সুখ ও আনন্দের অনুভূতি সৃষ্টি করা।
সামাজিক সংহতির প্রয়োজনীয়তা
বিশ্বে যখন বৈষম্য বাড়ছে, তখন কুরবানি আমাদের শিক্ষায় ফিরিয়ে দেয় মানবতার নীতিমালা। তা শুধু ধর্মীয় বিধান নয়, বরং এটি একটি সামাজিক দায়িত্ব, যা সমাজের সকল শ্রেণীকে একত্রিত করে। কুরবানি একটি সমতাভিত্তিক সমাজ নির্মাণের পথিকৃৎ হিসেবে কাজ করে।
তবে সামাজিক সংহতি তৈরি করার জন্য কেবল কুরবানি নয়, এর মাধ্যমেও উচিত একটি সৎ ও সত্যিকারের দানশীল মনোভাব তৈরি করা, যাতে ভবিষ্যতেও আমরা আমাদের সমাজের দরিদ্রদের পাশে দাঁড়াতে পারি।
কুরবানি ,ইসলামের সামাজিক নীতির অন্যতম অংশ হিসেবে দাঁড়িয়ে, দানশীলতা, সংহতি এবং একতার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করে। আমরা কুরবানি দিয়ে দরিদ্রদের পাশে দাঁড়িয়ে সমাজে সুখ ও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে পারি, যা আসলে ইসলামের মূল চেতনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ।