হাত-পা ফাটা শুধু শীতকালের সমস্যা নয়, শরীরের আর্দ্রতা ও স্বাস্থ্যহানির একটা বার্তা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
হাত-পা ফাটা-শুধু শীতকালে নয়, এই সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় বছরের নানা সময়েই। অনেকের কাছে এটি কেবল এক ধরনের ত্বকের শুষ্কতা মনে হলেও, বাস্তবে এটি হতে পারে আমাদের শরীরের ভেতরের কিছু সংকেতের বহিঃপ্রকাশ।
চিকিৎসা বিজ্ঞান ও ত্বক বিশেষজ্ঞদের ব্যাখ্যায় উঠে এসেছে, ত্বকের আর্দ্রতা হারিয়ে যাওয়া ছাড়াও নানা উপকারিত উপাদানের ঘাটতি এবং পরিবেশগত কারণে হাত-পা ফাটার প্রবণতা বাড়ে।
কেন ফাটে হাত-পা?
ত্বকের উপরিভাগে একটি প্রাকৃতিক তৈলাক্ত স্তর (lipid barrier) থাকে, যা ত্বককে আর্দ্র ও নরম রাখে। যখন এই স্তর ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা কমে যায়, তখন ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়ে এবং ফাটতে শুরু করে।
⇨ কম পানি পান করা
⇨ অতিরিক্ত গরম পানি দিয়ে গোসল
⇨ ডিটারজেন্ট ও হারশ কেমিক্যালযুক্ত সাবান ব্যবহার
⇨ ডায়াবেটিস বা থাইরয়েড সংক্রান্ত রোগ
- এই কারণগুলো হাত-পা ফাটার পেছনে সক্রিয় ভূমিকা রাখে।
কোন বয়সে বেশি হয়?
বয়স্কদের মধ্যে এই সমস্যা বেশি দেখা গেলেও, আজকাল কম বয়সীদের মধ্যেও এটি বাড়ছে। প্রযুক্তির সঙ্গে দীর্ঘসময় স্ক্রিন ব্যবহারের কারণে পানি পানের হার কমে যাওয়া, রুটিনবিহীন জীবনযাপন এবং দূষিত পরিবেশ—সব মিলিয়ে ত্বকের স্বাভাবিকতা নষ্ট হচ্ছে দ্রুত।
হাত-পা ফাটা কি কখনো বিপজ্জনক হতে পারে?
অবহেলা করলে ফাটা অংশ দিয়ে জীবাণু প্রবেশ করতে পারে, যা সংক্রমণের আশঙ্কা তৈরি করে। বিশেষ করে পায়ের গোড়ালির ফাটায় রক্তপাত, ব্যথা এবং হাঁটার সময় অস্বস্তি হয়ে উঠতে পারে নিত্যদিনের সমস্যা। ডায়াবেটিক রোগীদের ক্ষেত্রে এটি আরও জটিল আকার নিতে পারে।
কীভাবে রক্ষা পাওয়া যায়?
☞ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা
☞ স্নানের পর ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার
☞ খুব গরম পানি এড়িয়ে চলা
☞ সপ্তাহে অন্তত ২ বার পা স্ক্রাব করে পরিষ্কার রাখা
☞ তুলতুলে মোজা পরিধান করা ঘুমের সময়
☞ এছাড়া ঘরোয়া উপায়ে প্রাকৃতিক উপাদান যেমন নারকেল তেল, ভ্যাসেলিন বা গ্লিসারিন ব্যবহার করলে উপকার মেলে।
হাত-পা ফাটা তুচ্ছ মনে হলেও, এটি আমাদের শরীরের যত্নহীনতার একটি বার্তা। ত্বক শরীরের সবচেয়ে বড় অঙ্গ—এটির যত্ন নেওয়া মানে নিজেকে যত্ন নেওয়া। শীতকালীন অভ্যাসকে সারা বছরের অভ্যাসে পরিণত করলে হাত-পা ফাটা থাকবে নিয়ন্ত্রণে, আর ত্বক থাকবে মসৃণ ও সুস্থ।