কেন পড়বেন দক্ষিণ কোরিয়ায়?

দক্ষিণ কোরিয়া অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের অন্যতম স্থিতিশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর দেশ। আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা OECD-এর সদস্য হওয়ায় দেশটির উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। এখানে শিক্ষার্থীরা যেমন ভালো একাডেমিক সুবিধা পান, তেমনি পড়াশোনার পাশাপাশি খণ্ডকালীন কাজ করে নিজের খরচ মেটানোর সুযোগও পান।

বিশ্বখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং উদ্ভাবনী শিক্ষাদান পদ্ধতি কোরিয়ার শিক্ষাকে এনে দিয়েছে আলাদা স্বীকৃতি। প্রযুক্তি, মেডিকেল, ইঞ্জিনিয়ারিং, বিজনেসসহ নানা খাতে এখানকার গ্র্যাজুয়েটরা দুনিয়াজোড়া কদর পান।


কাজের সুযোগ ও ভাষা দক্ষতা

ছাত্র ভিসায় থাকা অবস্থায় সপ্তাহে ২০ থেকে ৩০ ঘণ্টা পর্যন্ত খণ্ডকালীন কাজ করার অনুমতি থাকে। তবে এর জন্য কোরিয়ান ভাষায় সাধারণ যোগাযোগ দক্ষতা থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজের ক্ষেত্রে ভাষার দক্ষতা থাকলে বেশি সুযোগ মেলে এবং আয়ও বাড়ে। বিশেষ করে যাঁরা খাবার সরবরাহ, দোকানে কাজ বা কল সেন্টারে চাকরি করতে চান, তাঁদের ভাষাজ্ঞান থাকা আবশ্যক।


স্কলারশিপ সুবিধা

দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার ও বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য পূর্ণ ও আংশিক স্কলারশিপ প্রদান করে। Korean Government Scholarship Program (KGSP), GKS (Global Korea Scholarship), এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বৃত্তি প্রোগ্রামের মাধ্যমে টিউশন ফি, আবাসন, জীবনযাপন খরচ ও বিমানভাড়া বহন করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করার সময় যদি আপনি স্কলারশিপের জন্যও আবেদন করেন এবং তা পেয়ে যান, তাহলে পরবর্তী ভিসা প্রক্রিয়া সহজ হয়।


জনপ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়

দক্ষিণ কোরিয়ার কিছু শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় হলো:

Seoul National University (SNU)

KAIST (Korea Advanced Institute of Science and Technology)

Yonsei University

Korea University

POSTECH (Pohang University of Science and Technology)

Sungkyunkwan University

Hanyang University

UNIST (Ulsan National Institute of Science and Technology)

DGIST (Daegu Gyeongbuk Institute of Science and Technology)

Kyung Hee University


কোন কোন বিষয়ে পড়া যায়?

দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার জন্য বেশ কিছু জনপ্রিয় বিষয় হলো:

ইঞ্জিনিয়ারিং ও প্রযুক্তি

বিজনেস ম্যানেজমেন্ট

অর্থনীতি ও ফাইন্যান্স

আন্তর্জাতিক সম্পর্ক

ফ্যাশন ডিজাইন ও মিডিয়া

বায়োটেকনোলজি

হসপিটালিটি ও ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট


ভর্তির সময় ও আবেদন প্রক্রিয়া

দক্ষিণ কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে দুটি প্রধান ভর্তির সিজন রয়েছে:

স্প্রিং সেমিস্টার (মার্চ): এর আবেদন সাধারণত সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চলে।

ফল সেমিস্টার (সেপ্টেম্বর): এর আবেদনকাল মার্চ থেকে মে পর্যন্ত।


প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র জমা দিতে হয়। আবেদনের সময় প্রয়োজন হতে পারে:

একাডেমিক সার্টিফিকেট ও ট্রান্সক্রিপ্ট

ইংরেজি ভাষার দক্ষতা প্রমাণ (TOEFL/IELTS)

ব্যক্তিগত বিবৃতি (Statement of Purpose)

সুপারিশপত্র

পাসপোর্ট এবং অন্যান্য পরিচয়পত্র


দক্ষিণ কোরিয়ায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ মানে শুধু ডিগ্রি অর্জন নয়, বরং এক ভিন্ন সংস্কৃতি, জীবনধারা ও আন্তর্জাতিক পরিবেশে নিজেকে প্রস্তুত করার এক সুবর্ণ সুযোগ। আপনি যদি উচ্চশিক্ষার পাশাপাশি একটি আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চান, তবে দক্ষিণ কোরিয়া হতে পারে আপনার জন্য সঠিক গন্তব্য।