মাংস রান্নায় বিপদের নাম অতিরিক্ত তেল ও ঝাল!! 

গবেষণায় দেখা গেছে, রেড মিট যখন উচ্চ তাপমাত্রায় বেশি তেলে ও ঝালে রান্না করা হয়, তখন এতে গড়ে ওঠে HCA (Heterocyclic amines) ও PAH (Polycyclic aromatic hydrocarbons) নামের কিছু যৌগ, যা হৃদযন্ত্রের পাশাপাশি ক্যান্সার ঝুঁকিও বাড়াতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ বাড়িয়ে দেয়, যা স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা বাড়ায়।
 

বিজ্ঞানসম্মত ও সুস্বাদু বিকল্প কীভাবে তৈরি করবেন?

স্বাদ ও স্বাস্থ্য দুটিকেই অক্ষুণ্ন রেখে রান্নার জন্য এখন "low-heat slow cooking" পদ্ধতি জনপ্রিয় হচ্ছে। এতে তেল কম লাগে এবং প্রাকৃতিক ফ্লেভার বজায় থাকে। নিচে কিছু কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো:

- টকদই বা টমেটো বেইজড ম্যারিনেড: এটি মাংস নরম করে, ঝাল না বাড়িয়েও স্বাদ আনে।

- কাঁচা মরিচের বদলে গোলমরিচ ও লবঙ্গ: ঝাল নয়, সুবাসে গুরুত্ব দিন।

- ভাজা বাদ দিয়ে ফুটিয়ে কষানো: এতে তেল-ঝাল কমে কিন্তু স্বাদ থাকে অটুট।

- লবণের বিকল্প: সামান্য লেবুর রস বা ভিনেগার ব্যবহার করে অ্যাসিড ব্যালান্স তৈরি করুন, যা লবণের চাহিদা কমায়।
 

কোন তেল কতটা নিরাপদ??

- অলিভ অয়েল (Extra Virgin): এতে রয়েছে মনো-স্যাচুরেটেড ফ্যাট ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, যা হৃদরোগ প্রতিরোধে কার্যকর। তবে উচ্চ তাপে নয়-শেষ পর্যায়ে মিশিয়ে ব্যবহার করাই উত্তম।

- সরিষার তেল: ওমেগা-৩ ও অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল উপাদানে সমৃদ্ধ। এতে রান্না করলে হৃদয়বান্ধবতা বজায় থাকে, তবে খাঁটি তেল ও মাঝারি তাপে ব্যবহার জরুরি।
 

✔ পুষ্টিগত পরামর্শ:

- প্রতিদিন এক চামচ তেলের বেশি নয়।

- লবণ সীমিত করুন দিনে ৫ গ্রাম বা তার কমে।

- ঝাল কমাতে শুকনো মরিচ বাদ দিয়ে তাজা ও সুগন্ধিযুক্ত মসলা ব্যবহার করুন।

- রান্নায় পেঁয়াজ ও রসুনের পরিমাণ বাড়িয়ে প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি উপাদান নিশ্চিত করুন।
 

রেসিপি মানেই শুধু স্বাদের খেলা নয়, সেটি হতে পারে সুস্থ জীবনের হাতিয়ারও। যারা হৃদরোগে আক্রান্ত বা ঝুঁকিতে আছেন, তাদের জন্য এই নতুন ধরনের মাংস রান্না হতে পারে কার্যকর একটি অভ্যাস পরিবর্তন। আজ থেকেই রান্নাঘরে ছোট কিছু বিজ্ঞানসম্মত পরিবর্তন আনুন—পেটও ভরবে, মনও থাকবে ঝরঝরে।