ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের তথ্যমতে, এ বছর ৬ হাজার ৩৮৯ জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিল। তাদের মধ্যে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে ১ হাজার ২০৩ জনের। বিশ্লেষণে দেখা যায়, বিয়েই অনুপস্থিতির প্রধান কারণ। এছাড়া অসুস্থতা, প্রস্তুতির অভাব, আর্থিক সংকট, গর্ভধারণ, পরিবারে মৃত্যুসহ নানা কারণে বাকিরা পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি।

বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গর্ভধারণের কারণে ২১ জন মেয়ে শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেয়নি। পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে প্রায় ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী জীবিকার তাগিদে কাজ শুরু করেছে। ১৯ জন শিক্ষার্থীর মৃত্যুর তথ্যও পাওয়া গেছে।

ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন ১৩টি জেলার মধ্যে মানিকগঞ্জ ও মাদারীপুরে বাল্যবিয়ের হার সবচেয়ে বেশি। মানিকগঞ্জে অনুপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৬৫ শতাংশ এবং মাদারীপুরে ৫৪ শতাংশের অনুপস্থিতির কারণ ছিল বিয়ে। যেসব শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল, তাদের মধ্যে ৫১ শতাংশ জানিয়েছে তারা আর পড়াশোনা চালিয়ে যাবে না। এই অংশের ৭৪ শতাংশই মেয়ে।

শিক্ষাবিদদের মতে, এই তথ্যগুলো নারী শিক্ষার ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি করে। বিশেষ করে ১০ বছর শিক্ষাজীবন শেষে শুধুমাত্র বিয়ের জন্য বা অর্থাভাবে একজন শিক্ষার্থীর পরীক্ষা দিতে না পারা সমাজের জন্য দুঃখজনক।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. খন্দোকার এহসানুল কবির বলেন, “অনুপস্থিতির কারণ অনুসন্ধানের এই উদ্যোগ এবারই প্রথম নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে অন্যান্য বোর্ডেও এ ধরনের গবেষণা পরিচালনার পরিকল্পনা রয়েছে।”

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এই প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য। বিশ্লেষকদের মতে, বাল্যবিয়ে, দারিদ্র্য ও সামাজিক বাধা মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও কার্যকর হস্তক্ষেপ ছাড়া এই সংকট উত্তরণ সম্ভব নয়।