ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনায় ইরানের পাল্টা হামলা, ব্যবহৃত হলো নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন

ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনায় ইরানের পাল্টা হামলা, ব্যবহৃত হলো নতুন ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনার নতুন ধাপে ইরান ইসরায়েলের সামরিক স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার ভোরে এই হামলায় ইরানি বাহিনী অত্যাধুনিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও আত্মঘাতী ড্রোন ব্যবহার করে ইসরায়েলের একাধিক সামরিক ও গোয়েন্দা স্থাপনায় আঘাত হানে।

ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (IRGC) জানিয়েছে, এই হামলা ‘অপারেশন ট্রু প্রমিজ থ্রি’র (True Promise III) ১৪তম ধাপের অংশ, যা ইসরায়েলি হামলার জবাবে পরিচালিত হয়। ব্যবহৃত অস্ত্রের মধ্যে ছিল খায়বার-শেকান, ফাত্তাহ এবং সেজ্জিল ক্ষেপণাস্ত্র—যার কয়েকটি এই প্রথমবারের মতো ব্যবহার করা হয়েছে।

ইরানি সূত্রের দাবি, ইসরায়েলের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও বেশ কয়েকটি ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে তেল আবিব শহরের আকাশে সাইরেন বাজতে ও মানুষজনকে আশ্রয়কেন্দ্রের দিকে দৌঁড়াতে দেখা যায়।

আঞ্চলিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হামলায় প্রায় ৫০টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ছোঁড়া হয়েছে এবং এতে অন্তত ৫০ জন নিহত হতে পারে। তবে ইসরায়েল এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি এবং দেশটির অভ্যন্তরীণ গণমাধ্যমগুলোকে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য প্রকাশ না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

IRGC আরও জানায়, হামলার মূল লক্ষ্য ছিল একটি উচ্চপর্যায়ের সামরিক ও গোয়েন্দা কেন্দ্র, যা একটি হাসপাতালের নিকটবর্তী এলাকায় অবস্থিত। ইরান অভিযোগ করেছে, ইসরায়েল বেসামরিক স্থাপনাকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, যা যুদ্ধ আইন লঙ্ঘনের শামিল।

ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ সাইয়্যেদ আলী খামেনী এক ভিডিও বার্তায় বলেন, “ইরানি জাতি কোনো চাপের কাছে মাথা নত করবে না। যেকোনো আগ্রাসনের জবাব দেওয়া হবে।”

উল্লেখ্য, গত শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় ইরানের কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী ও বেসামরিক নাগরিক নিহত হয় বলে তেহরান দাবি করে। ইরান এ হামলাকে ‘বিনা উসকানির আগ্রাসন’ হিসেবে বর্ণনা করে।

ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল সাইয়্যেদ আবদুররহিম মুসাভি বলেন, “এখন পর্যন্ত চালানো হামলাগুলো কেবল সতর্কবার্তা। প্রকৃত প্রতিক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি।”

বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, চলমান পাল্টা-পাল্টি হামলা বড় ধরনের আঞ্চলিক সংঘাতে রূপ নিতে পারে, যেখানে একাধিক রাষ্ট্র এবং অ-রাষ্ট্রীয় শক্তি জড়িত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।


সম্পর্কিত নিউজ