ভারতের মহাকুম্ভমেলায় পদদলিতের ঘটনায় সাতজনের বেশি নিহত

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ভারতের উত্তর প্রদেশ রাজ্যে মহাকুম্ভমেলায় পদদলিতের ঘটনায় সাতজনের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে এবং প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন। পবিত্র স্নান নিতে লাখ লাখ মানুষের সমাগমে ঘটনাস্থলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
ড্রোনে ধারণ করা ফুটেজে দেখা গেছে, মহাকুম্ভমেলার সবচেয়ে শুভ দিনে পুণ্যস্নানের জন্য বুধবার ভোরের আলো ফোটার আগেই লাখ লাখ পুণ্যার্থী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নদীর তীরে জড়ো হতে থাকেন। পদদলিতের ঘটনার পর প্রকাশিত ভিডিও ও ছবিতে দেখা গেছে, স্ট্রেচারে করে মরদেহ সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং আহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অনেকেই মাটিতে বসে আহাজারি করছেন।
রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ঘটনাস্থলের দিকে বেশ কিছু অ্যাম্বুলেন্স ছুটে যেতে দেখেছেন তিনি। এছাড়াও তিনি কয়েকটি মরদেহ দেখেছেন বলে জানান।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার দিবাগত রাত একটার দিকে প্রথম পদদলিতের ঘটনা ঘটে, তবে তা ততটা গুরুতর ছিল না। কিন্তু পরে পুণ্যার্থীরা ছোটাছুটি করার সময় আরেকটি বড় পদদলিতের ঘটনা ঘটে। এ সময় অনেকেই পন্টুন সেতুর দিকে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা করেন, কিন্তু সেতু বন্ধ থাকায় তারা আটকে পড়েন।
মুম্বাই থেকে কুম্ভমেলায় আসা পুণ্যার্থী রাভিন ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, ‘আমি অনেক লোককে ভিড়ের মধ্যে পড়ে যেতে দেখেছি এবং তাদের ওপর দিয়ে অনেকেই হেঁটে গেছেন। অনেক শিশু ও নারী অসহায় হয়ে সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন।’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং উদ্ধার কার্যক্রম চালাতে কর্তৃপক্ষ র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স নামের বিশেষ ইউনিট মোতায়েন করেছে। কর্মকর্তারা জানান, উদ্ধার অভিযান এখনও চলছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইতিমধ্যে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং ‘অবিলম্বে সহায়তামূলক পদক্ষেপ’ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
উত্তর প্রদেশে দুই সপ্তাহ আগে শুরু হওয়া মহাকুম্ভমেলায় প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে। গত দুই সপ্তাহে প্রায় ১৪ কোটি ৮০ লাখ মানুষ মেলায় অংশ নিয়েছেন। কুম্ভমেলা উপলক্ষে প্রয়াগরাজে অস্থায়ীভাবে একটি শহর তৈরি করা হয়েছে। বুধবার মহাকুম্ভমেলার পবিত্র স্নানে রেকর্ড ১০ কোটি মানুষের সমাগম আশা করেছিল কর্তৃপক্ষ।
হিন্দু সম্প্রদায়ের বিশ্বাস অনুযায়ী, গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী (পৌরাণিক অদৃশ্যমান নদী) নদীর সঙ্গমস্থলে স্নান করলে পাপমুক্তি ঘটে এবং জন্ম ও মৃত্যুর চক্র থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। তবে পদদলিতের ঘটনার পর শাহি স্নানের অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে।
সন্ন্যাসিনী রবীন্দ্র পুরী বলেন, ‘আমাদের সকল সাধু-সন্ত যখন স্নানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখনই আমরা খবরটি পেলাম। সেই কারণে আমরা আমাদের স্নান বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
২০১৩ সালেও কুম্ভমেলার সবচেয়ে পবিত্র দিনে পদদলিতের ঘটনা ঘটেছিল, যাতে ৩৬ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়। তাদের বেশির ভাগই ছিলেন নারী।