পাকিস্তানকে সর্বাধুনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র DF-17 দিচ্ছে চীন

পাকিস্তানকে সর্বাধুনিক হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র DF-17 দিচ্ছে চীন
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

দক্ষিণ এশিয়ায় সামরিক ভারসাম্য নতুনভাবে নাড়িয়ে দেওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে চীন ও পাকিস্তান। সম্প্রতি প্রকাশিত একাধিক আন্তর্জাতিক সামরিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী, পাকিস্তান উন্নত হাইপারসনিক অস্ত্র ব্যবস্থার দিকে বড় পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার অংশ হিসেবে দেশটি চীনের অত্যাধুনিক DF-ZF Hypersonic Glide Vehicle (HGV) এবং DF-17 ব্যালিস্টিক মিসাইল সিস্টেম অর্জনের প্রাথমিক আলোচনায় প্রবেশ করেছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এ অস্ত্র পাকিস্তানকে এমন এক ক্ষমতা দেবে যা ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সহজেই পাশ কাটিয়ে যেকোনো কৌশলগত লক্ষ্যবস্তুতে সরাসরি আঘাত হানতে সক্ষম হবে।

চীনের তৈরি DF-ZF HGV Mach 20 গতিসম্পন্ন (ঘণ্টায় প্রায় ২৪,০০০ কিমি) এবং এটি পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে মাত্র আধাঘণ্টার মধ্যে পৌঁছাতে পারে। এটি প্রচলিত ব্যালিস্টিক মিসাইলের মতো একমুখী পথে না গিয়ে মাঝপথে দিক পরিবর্তন করতে সক্ষম। ফলে প্রতিপক্ষের রাডার ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এড়িয়ে যাওয়া এর জন্য অনেক সহজ হয়ে যায়।

চীন ও পাকিস্তানের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা নতুন নয়। গত পাঁচ বছরে পাকিস্তানের অস্ত্র আমদানির ৮০ শতাংশের বেশি এসেছে চীন থেকে। এবার সেই সম্পর্ক আরও গভীরতর হচ্ছে হাইপারসনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে।

সম্প্রতি চীনা প্রতিরক্ষা সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তানকে একটি বিশাল সামরিক সহায়তা প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে ৫ম প্রজন্মের J-35A Stealth Fighter, HQ-19 Long-Range Missile Defense System, এবং KJ-500 Early Warning Aircraft। এর সঙ্গে DF-17-HGV সিস্টেম যুক্ত হলে পাকিস্তান দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম বিপজ্জনক প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

বিশ্বজুড়ে হাইপারসনিক অস্ত্র নিয়ে চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা। যুক্তরাষ্ট্র DARPA-র অধীনে প্রতিরক্ষামূলক GPI ও HBTSS প্রকল্প নিয়ে ব্যস্ত, রাশিয়া ইতিমধ্যে Avangard (Mach 27), Kinzhal, ও Zircon মিসাইল মোতায়েন করেছে। এমনকি ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, ইরান এবং উত্তর কোরিয়া সব দেশই হাইপারসনিক প্রযুক্তি উন্নয়নে যুক্ত।

এই অস্ত্র ব্যবস্থার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হলো, এটি রাডারে ধরা পড়ে না, অনেক বেশি দ্রুতগামী, নির্ভুল লক্ষ্যভেদী, এবং পারমাণবিক ও প্রচলিত উভয় ধরনের ওয়ারহেড বহনে সক্ষম। এতে ব্যবহৃত হয়েছে উন্নত হিট শিল্ড ও হাই-টেম্পারেচার সহনশীল কম্পোজিট উপাদান, যা এটিকে উচ্চ গতিতেও স্থিতিশীল রাখে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই প্রযুক্তি ভবিষ্যতের যুদ্ধকৌশলে আমূল পরিবর্তন আনবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, উন্নত সেন্সর ও স্মার্ট সিস্টেম যুক্ত হলে এটি আরও ভয়ংকর হয়ে উঠবে।

উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, হাইপারসনিক অস্ত্র এখনো কোনো আন্তর্জাতিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তির আওতায় নেই। ফলে এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে উদ্বেগ বাড়ছে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, পাকিস্তান যদি চীনের DF-ZF প্রযুক্তি অর্জন করে, তাহলে শুধু দক্ষিণ এশিয়া নয়, বরং বৈশ্বিক নিরাপত্তা কাঠামোর ওপরও এর গভীর প্রভাব পড়বে।


সম্পর্কিত নিউজ