গণতন্ত্রের মুখোশে আমেরিকার স্বার্থের রাজনীতি

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতিতে সরকার পতন নতুন কিছু নয়। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ইরানে সরকার পরিবর্তনের আহ্বান কেবলমাত্র বহু পুরনো এক নীতিরই সম্প্রসারণ, যার মূল লক্ষ্য বিশ্বজুড়ে মার্কিন স্বার্থ রক্ষা এবং প্রভাব বিস্তার।
মার্কিন স্বার্থ রক্ষার্থে ১৯৫৩ সালে ইরানের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ মোসাদ্দেককে সরিয়ে দেওয়া হয়। তিনি তেহরানের তেলসম্পদ জাতীয়করণ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মোসাদ্দেককে হটানোর সেই অভ্যুত্থানের পেছনে ছিল সিআইএ ও ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের গোপন পরিকল্পনা। একইভাবে গুয়েতেমালায় ভূমি সংস্কার নীতির কারণে হাকোবো আরবেনজকে উৎখাত করা হয়। এতে সেখানে শুরু হয় দীর্ঘ সামরিক শাসন ও গৃহযুদ্ধ।
চিলিতে স্যোসালিস্ট প্রেসিডেন্ট সালভাদর আলেন্দেকে সরিয়ে আউগাস্টো পিনোচেতের সামরিক শাসন জারি হয় মার্কিন সহায়তায়। কঙ্গোতে প্যাট্রিস লুমুম্বাকে হত্যা করে যুক্তরাষ্ট্র সেখানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তাদের খনিজ সম্পদ দখলের চেষ্টা চালায়।
নিকারাগুয়ায় কন্ট্রা বিদ্রোহীদের অর্থায়ন করে স্যান্ডিনিস্তা সরকারের পতনের পথ তৈরি করে ওয়াশিংটন। ইরাক আক্রমণের অজুহাত ছিল অস্ত্র খোঁজ, বাস্তব ছিল তেলের নিয়ন্ত্রণ ও মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্য। এর ফলাফল, লাখো মানুষের মৃত্যু ও আইএস-এর উত্থান।
হাইতিতে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট জ্যঁ বেত আরিস্তিদকে দুইবার উৎখাত করা হয়। ভেনিজুয়েলায় নিকোলাস মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরাতে মার্কিন সমর্থনে একজন বিরোধী নেতাকে অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়।
বলিভিয়ায় ইভো মোরালেসের বিজয়কে ঘিরে মার্কিন সমর্থনে ‘নির্বাচনি জালিয়াতির’ অভিযোগ তুলে সামরিক সহায়তায় তাকে হটানো হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রেই মার্কিন হস্তক্ষেপের ফল ছিল অনিশ্চয়তা, বিশৃঙ্খলা, এবং মানবিক বিপর্যয়।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র বৈশ্বিক রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়, যার মূল্য চোকাতে হয় সাধারণ জনগণকে।