জনপ্রিয় মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সম্প্রতি তুরস্কের রাজনৈতিক স্যাটায়ার সাময়িকী লেমান-এ প্রকাশিত একটি কার্টুনের জেরে এই বিতর্ক ও গ্রেপ্তার। কার্টুনটিতে দেখা যায়, একজন মুসলিম ও একজন ইহুদি ব্যক্তিকে হাত মেলাচ্ছে যাদের পায়ের নিচ থেকে একের পর এক বোমা পড়ছে, তাদের প্রত্যেকের পিঠে পাখা এবং মাথার ওপর দেবদূতের মতো আলোকচক্র রয়েছে। এখানে মুসলিম ব্যক্তির নাম দেওয়া হয় 'মোহাম্মেদ'।

লেমানের সর্বশেষ সংখ্যা প্রকাশের পরপরই কার্টুনটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়। অভিযোগ ওঠে যে কার্টুনটি (ইসলাম ধর্মের প্রবর্তক) হযরত মুহাম্মদ (সঃ) এবং (ইহুদি ধর্মের প্রবর্তক) হযরত মূসা (আঃ)-কে ব্যঙ্গ করে আঁকা হয়েছে। লেমান কর্তৃপক্ষ এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল তুরস্কের প্রধান পর্যটন সড়কে শত শত মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করেন। বিক্ষোভকারীরা 'আল্লাহু আকবার' স্লোগানের সাথে লেমানের কর্তৃপক্ষ, সম্পাদক ও কার্টুনিস্টদের ইসলামী শরিয়া আইন অনুসারে বিচারের দাবি জানান।

তুরস্কের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়েরলিকায়া সাংবাদিকদের বলেন, "এই কার্টুনটি বাকস্বাধীনতা এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার চরম অপব্যবহার। যারা এটি অঙ্কন ও প্রকাশের সঙ্গে যুক্ত, তাদের সবাইকে আইনের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।"
তুরস্কের প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারি ফাহরেত্তিন আলতুন এক বিবৃতিতে এই কার্টুনকে "আমাদের বিশ্বাস এবং মূল্যবোধের ওপর ঘৃণ্য আঘাত" বলে অভিহিত করেছেন।

এদিকে, সোমবার এক বিবৃতিতে লেমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, "এই কার্টুনটিতে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স.)-কে কোনোভাবেই ব্যঙ্গ করা হয়নি; বরং গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে যেসব মুসলিম সহযোগিতা করছেন— কার্টুনের 'মোহাম্মেদ' তারই প্রতীক। কারণ এই ক্ষমতাবান মুসলিমদের কারণে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মুসলিম নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।"

তারা আরও বলে, "আমরা মহানবী (সা.)-এর ক্যারিকেচার আঁকিনি। তাই যে অভিযোগ আমাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে— তা সঠিক নয়। তারপরও আমাদের প্রকাশিত কার্টুনের কারণে যারা আঘাত পেয়েছেন— তাদের কাছে আমরা ক্ষমা চাইছি।"

তুরস্কের বিচার বিষয়ক মন্ত্রণালয় এ ইস্যুতে তদন্তের ঘোষণা দিয়েছে।