ঠাকুরগাঁওয়ে নিম্নমানের উপকরণে সড়ক নির্মাণঃ লিখিত অভিযোগেও নেই প্রতিকার

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈল উপজেলার লেহেম্বা ইউনিয়নে প্রায় দুই কিলোমিটার দীর্ঘ একটি সড়ক নির্মাণে নিম্নমানের ইট, খোয়া ও বালু ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। এই অনিয়ম নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং উপজেলা প্রকৌশলীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও কাজের মানোন্নয়নে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন স্থানীয়রা।
গতকাল সোমবার (৩০ জুন) দুপুরের সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত ইটের অধিকাংশই ভাঙা ও নিম্নমানের। খোয়ার আকার অসমান এবং বালু যথাযথভাবে পরিশোধিত নয়।ফলে সড়কের কাজের মান নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, দিনাজপুর অঞ্চলের প্রকল্পের আওতায় ১ হাজার ৯৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের এই সড়কটি পাকাকরণের কাজ শুরু হয় ২০২৪ সালের ৭ আগস্ট, যা ২০২৫ সালের ৬ আগস্ট শেষ হওয়ার কথা। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১ কোটি ৯২ লাখ ২২ হাজার ৬৩৩ টাকা।
রাজশাহীর বরেন্দ্র কনস্ট্রাকশন লিমিটেড টেন্ডারের মাধ্যমে কাজটি পেলেও স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, প্রতিষ্ঠানটি এই প্রকল্পটি রাণীশংকৈলের স্থানীয় ঠিকাদার আবু সাঈদ-এর কাছে বিক্রি করে দিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা জয়ন্ত রায় বলেন, "আমি নিজেই ইট ভাঙার মিস্ত্রি। এখানে তিন ধরনের নিম্নমানের ইট ব্যবহার করা হচ্ছে। এ রাস্তা বেশি দিন টিকবে না।"
ইউপি সদস্য শাহাজাহান আলী হতাশা প্রকাশ করে বলেন, "লিখিত অভিযোগ দিয়েও কোনো লাভ হয়নি। ঠিকাদার নিজের মতো কাজ করে যাচ্ছেন।" নির্মাণশ্রমিক বাবলু জানান, "২৯ বছর ধরে কাজ করছি। এখানে যে ইট ব্যবহার হচ্ছে, তা ৩ নম্বর। ইটের মান খুবই খারাপ। কিন্তু আমাদের কিছু করার নেই। যেভাবে নির্দেশ দেয়, সেভাবেই কাজ করি।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় ঠিকাদার আবু সাঈদ শুধু বলেন, "আমি তো কাজটা কিনেই করেছি। লাভ আর কত।"
উপজেলা প্রকৌশলী আনিসুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, "ভাঙা রেজিং মেরামত করা হবে। আর সব ইট তো খারাপ নয়, ১০০টার মধ্যে ২–১টা খারাপ হতে পারে। কাজের মান ভালোই হচ্ছে। এদিককার মানুষ ইট চিনে না।"
তার এই বক্তব্য স্থানীয়দের ক্ষোভ আরও বাড়িয়েছে। দ্রুত এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে সড়কের মান নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী।