গাজায় ত্রাণের আড়ালে মৃত্যুর ফাঁদ

গাজায় ত্রাণের আড়ালে মৃত্যুর ফাঁদ
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

গাজায় মানবিক সহায়তা বিতরণের নামে গণহত্যার ষড়যন্ত্র চলছে—এমনই অভিযোগ করলেন নরওয়ের জরুরি চিকিৎসক ও গাজায় ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে সেবা প্রদানকারী ডা. ম্যাডস গিলবার্ট। তিনি বলেন, গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (GHF)-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রগুলো আদতে “একটি ভয় ও হত্যার ফাঁদ।”

GHF, যাকে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ সহায়তায় গাজায় প্রবেশ করানো হয়েছে, তারা বিতরণ করছে খাবারের প্যাকেট যা যথেষ্ট পুষ্টিকর নয়। প্যাকেটগুলিতে নেই ডিম, দুগ্ধজাত পণ্য, শিশুদের জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মুলা দুধ, কিংবা ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। তাছাড়া, এসব খাবার রান্না করতে হয়—কিন্তু গাজায় পানি ও জ্বালানির মারাত্মক ঘাটতির কারণে রান্না করাও দুরূহ।

ডা. গিলবার্ট জানান, একেকটি প্যাকেট মাত্র ১,৭৫০ কিলোক্যালরি শক্তি দেয়, যেখানে একজন ব্যক্তির দৈনিক ন্যূনতম প্রয়োজন ২,৫০০ কিলোক্যালরি। তিনি এটিকে পূর্বে চালু থাকা UNRA ব্যবস্থার তুলনায় “গুরুতরভাবে অপর্যাপ্ত” হিসেবে অভিহিত করেন।

সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, চারটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের স্থাপত্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে—এগুলো ইসরায়েলি সামরিক কৌশল অনুযায়ী ডিজাইন করা হয়েছে। নরওয়ের চিকিৎসক বলেন, “এই কেন্দ্রগুলো মূলত ক্ষুধার্ত মানুষদের নিয়ন্ত্রণ, আতঙ্ক সৃষ্টির এবং হত্যা করার উদ্দেশ্যে স্থাপন করা হয়েছে।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজা শহর ও উত্তরের প্রায় ১০ লাখ মানুষ এসব কেন্দ্র থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত, কারণ নেটসারিম করিডরের উত্তরে কোনো কেন্দ্রই নেই।

GHF দাবি করেছে, তারা পাঁচ সপ্তাহে ৫২ মিলিয়নের বেশি খাবার বিতরণ করেছে। কিন্তু ডা. গিলবার্ট এটিকে "মিথ্যাচার" বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বলেন, “এই সহায়তা মানবিক নয়, এটি সামরিক অস্ত্রের মতো ব্যবহৃত হচ্ছে।”

জাতিসংঘ বলছে, ৯ হাজার ট্রাক প্রস্তুত রয়েছে গাজায় প্রবেশের জন্য—কিন্তু বাধা সৃষ্টি করছে ইসরায়েল। ডা. গিলবার্ট পশ্চিমা দেশগুলোকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “গাজা এখন এক উন্মুক্ত কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে পরিণত হয়েছে।”


সম্পর্কিত নিউজ