রাজশাহীর এক চিকিৎসকের অর্থে গাজায় শিশুদের রুটি-কীভাবে সম্ভব হলো?

রাজশাহীর এক চিকিৎসকের অর্থে গাজায় শিশুদের রুটি-কীভাবে সম্ভব হলো?
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় প্রতিদিনই বেড়ে চলেছে খাদ্য সংকট। ইসরায়েলি অবরোধ ও ধারাবাহিক হামলায় ধ্বংসপ্রাপ্ত অবকাঠামো, সীমিত খাদ্য সরবরাহ ও নিরাপদ জলের অভাবের কারণে লাখ লাখ মানুষ বিশেষ করে শিশুদের জীবন হুমকির মুখে পড়েছে। জাতিসংঘের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গাজায় শিশুদের অপুষ্টি এবং ক্ষুধা চরম আকার ধারণ করছে।

এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মানুষের সহমর্মিতা এবং মানবিক সহায়তা ক্রমেই বাড়ছে। অনেক ব্যক্তি ও সংগঠন ব্যক্তিগত পর্যায়ে গাজার জন্য অর্থ, ওষুধ ও খাদ্য সহায়তা পাঠাচ্ছেন। এদের মধ্যে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজের সাবেক শিক্ষক ও প্রবীণ চিকিৎসক ডা. বাকী আহমেদ এক ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।

সম্প্রতি জানা গেছে, ঢাকায় অবসরজীবন কাটানো এই চিকিৎসক নিজের উপার্জনের টাকা থেকে অর্থ পাঠিয়েছেন, যা দিয়ে গাজায় শিশুদের জন্য রুটি তৈরি করে বিতরণ করা হচ্ছে। গাজায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীরা তার পাঠানো অর্থ দিয়ে বেকারিতে রুটি তৈরি করছেন এবং তা সরাসরি ক্ষুধার্ত শিশু ও তাদের পরিবারে পৌঁছে দিচ্ছেন।

ডা. বাকী আহমেদ শুধুমাত্র গাজার জন্য নয়, দেশের মধ্যেও বহু শহীদ পরিবারের দায়িত্ব নিয়েছেন। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজে শিক্ষকতা জীবনের পর অবসরে এসেও তিনি তার আয় মানবতার সেবায় ব্যয় করছেন। তার এই নিঃস্বার্থ উদ্যোগে অনুপ্রাণিত হয়ে আরও অনেকে গাজার মানুষের জন্য সহায়তা করতে আগ্রহী হচ্ছেন।

গত কয়েক দশক ধরে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের কেন্দ্রে রয়েছে। ২০০৭ সাল থেকে গাজা কার্যত অবরুদ্ধ, প্রবেশ ও বাহিরের অধিকাংশ নিয়ন্ত্রণই ইসরায়েলের হাতে। সীমিত খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির প্রবাহের কারণে সেখানে মানবিক পরিস্থিতি ক্রমেই অবনতির দিকে। ইসরায়েলি বিমান হামলা, স্থল অভিযান এবং নিয়মিত সংঘর্ষে হাজার হাজার মানুষ নিহত ও আহত হয়েছেন। শিশু ও বয়স্করা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত।

বাংলাদেশের জনগণ ঐতিহাসিকভাবেই ফিলিস্তিনের সংগ্রামের পাশে রয়েছে। নানা সময়ে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান এবং এমনকি সরকারি পর্যায় থেকেও গাজার জনগণের জন্য মানবিক সহায়তা পাঠানো হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে গাজা নিয়ে ব্যাপক সংহতি প্রকাশ, তহবিল সংগ্রহ, দোয়া মাহফিল এবং সাদকা-ফিতরার অংশ গাজায় পাঠানো এখন নিয়মিত উদ্যোগের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ডা. বাকী আহমেদের মতো ব্যক্তি এই সহমর্মিতাকে আরেক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছেন। ঢাকায় বসে গাজায় শিশুদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার মতো উদ্যোগ প্রমাণ করে, দূরত্ব যতই হোক, মানবতা কোনো সীমানা মানে না।


সম্পর্কিত নিউজ