মুক্তিযুদ্ধকে ওপরে রেখে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ চায় বিএনপি

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে সরকারকে সব ধরণের সহযোগিতা করছে বলে দাবি বিএনপির। দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া এ সংক্রান্ত নতুন খসড়াটি প্রয়োজনীয় সংযোজন-বিয়োজন করে এক উপদেষ্টার কাছে পাঠানো হয়েছে।
তবে, বিএনপি মনে করে জুলাই ঘোষণাপত্র সাংবিধানিক নয়, বরং রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির পক্ষে মত দিয়েছে দলটি। বিএনপির দেওয়া চূড়ান্ত খসড়ায় একাত্তরের স্বাধীনতাযুদ্ধকেই প্রধান অর্জন হিসেবে উল্লেখ করে ঘোষণাপত্র শুরু হওয়া উচিত বলে দাবি করেছে তারা।
গত বুধবার স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এসব মত দিয়ে শীর্ষ নেতারা বলেছেন, জাতীয় ঐকমত্যের ভিত্তিতে ঘোষণাপত্র প্রণীত হওয়ার পর রাষ্ট্র যথাযথ প্রসিডিওর অনুযায়ী এটিকে আর্কাইভ (সংরক্ষণ) করবে।
জানা গেছে, বুধবারের বৈঠকে বিএনপি নেতারা বলেছেন, ২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থান সংবিধানে স্থান দেওয়া হলে তাতে ভবিষ্যতে জটিলতা বাড়তে পারে। কেউ কেউ আবার স্বৈরাচারবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানকেও সংবিধানে রাখার দাবি তুলতে পারে। এজন্য তারা রাজনৈতিক দলিল হিসাবে রাষ্ট্রের আর্কাইভে ২০২৪ সালের ঘোষণাপত্র সংরক্ষণের পক্ষে মত দিয়েছেন।
স্থায়ী কমিটির একাধিক সদস্যের মতে, খসড়ার প্রথম পয়েন্টে উল্লেখিত “বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের এ ভূখণ্ডের মানুষ স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যুগের পর যুগ সংগ্রাম করেছিল এবং এর ধারাবাহিকতায় পাকিস্তান আন্দোলনের মাধ্যমে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে ১৯৪৭ সাল থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল” এই অংশ অপ্রয়োজনীয় বিবেচনা করে তা বিএনপি বাদ দিয়েছে।
দলটির নেতারা বলেছেন, ১৯৭১ সালের স্বাধীনতাযুদ্ধে গৌরবময় বিজয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সেই স্বাধীনতাযুদ্ধকেই প্রধান অর্জন হিসেবে উল্লেখ করে ঘোষণাপত্র শুরু হওয়া উচিত।
খসড়া ঘোষণাপত্রের একটি পয়েন্টে আছে- ‘যেহেতু পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন শাসনামলের রাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিনির্মাণের ব্যর্থতা ও অপর্যাপ্ত ছিল এবং এ কারণে বাংলাদেশের প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও শাসকগোষ্ঠীর জবাদিহি প্রতিষ্ঠা করা যায়নি’। বিএনপি এক্ষেত্রে ‘বিভিন্ন শাসনামলের জায়গায়’ ‘আওয়ামী শাসনামলের’ কথা উল্লেখ করেছে।
খসড়ায় এক-এগারো সংশ্লিষ্ট একটি পয়েন্টে উল্লেখিত ‘ক্ষমতার সুষ্ঠু রদবদলের রাজনৈতিক ব্যর্থতার সুযোগে’ কথাগুলো পরিবর্তন করে ‘দেশি-বিদেশি চক্রান্তের সুযোগে’ লেখার সুপারিশ করেছে বিএনপি।
এছাড়া দলটি ১৯৭২ সালের ‘সংবিধান পুনর্লিখন বা প্রয়োজনে বাতিল করার অভিপ্রায়’ বাদ দিয়ে ‘সংবিধানের বিদ্যমান সংস্কার উপযুক্ত প্রক্রিয়ায় সংশোধন’ করার পক্ষে মত দিয়েছে।
জানা গেছে, ঘোষণাপত্রের খসড়া থেকে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ প্রসঙ্গটি বাদ দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত জানুয়ারি মাসে প্রস্তুত করা ঘোষণাপত্রের খসড়ার শেষ অংশে ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’ কথাটি উল্লেখ ছিল। এর বাইরেও খসড়ায় আরও কিছু শব্দগত সংযোজন-বিয়োজন করেছে বিএনপি।
সরকার ও রাজনৈতিক সূত্রগুলো জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ সপ্তাহের মধ্যেই জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে চায় অন্তর্র্বর্তী সরকার। আর এটি চূড়ান্ত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সরকারের পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদকে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।