মাকে ঘরছাড়া করল ছেলে, থানায় গিয়ে বিচার চাইলেন ৭০ বছরের বিলকিস আক্তার

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
নিজ হাতে গড়া ঘর, স্বামীর স্মৃতি, সন্তানের শৈশবের পদচিহ্ন—সবকিছুর মাঝেই ছিল ভালোবাসা ও ত্যাগের গল্প। কিন্তু সেই ঘরেই আজ অবাঞ্ছিত ৭০ বছরের এক মা। হৃদয়বিদারক এই ঘটনার শিকার নওগাঁ শহরের কাজীর মোড় এলাকার বিলকিস আক্তার।
সোমবার সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে দেখেন লোহার গেটে তালা। ছেলেকে ফোন করলে স্পষ্ট জবাব মেলে, ‘তুই তো দুই আনার মালিক, রাস্তায় গিয়ে থাক।’
বৃদ্ধা মায়ের অভিযোগ, একমাত্র ছেলে মোস্তাফিজুল ইসলাম সোহাগ তাকে ঘরে ঢুকতে দিচ্ছেন না। সন্ধ্যায় নওগাঁ সদর থানায় গিয়ে তিনি ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। পরে পুলিশ রাতেই মোস্তাফিজুলকে গ্রেপ্তার করে।
বিলকিস আক্তার জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে তার স্বামী ও তিনি মিলে এই ঘর বানান। স্বামী মারা যাওয়ার পর তিন সন্তানকে অংশ দিয়ে বাকি সম্পত্তির ৭০ শতাংশ নিজের নামে নেন। এরপরও ছেলে ক্রমেই বাড়ির একচ্ছত্র মালিকানা দাবি করতে থাকে। শুরু হয় মানসিক নির্যাতন। সম্প্রতি তাকে সরাসরি ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়।
ঘটনার দিন তিনি একটানা ছয় ঘণ্টা গ্যারেজে বসে ছিলেন। ক্লান্ত শরীর আর অপমানিত মন নিয়ে শেষে আশ্রয় নেন থানায়।
ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় মানবাধিকারকর্মীরা বিলকিস আক্তারের পাশে দাঁড়ান। কিন্তু তাদের সামনেই ছেলে সোহাগ মাকে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে চান এবং প্রতিবাদকারীদের ওপরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
নওগাঁ সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুশফিকুর রহমান জানান, বৃদ্ধা মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে এবং থানায় অসদাচরণের কারণে ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত চলছে।
নওগাঁর মানবাধিকার সংগঠনের সদস্য নাইস পারভিন বলেন, “বিলকিস আক্তারের ঘটনা শুধু ব্যক্তি পর্যায়ের নয়, এটা সমাজের বিবেক নাড়া দেওয়ার মতো। একজন মা, যিনি নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন সন্তানদের জন্য, তাঁকে এভাবে ঘরছাড়া করা মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।