গ্রেডের ভারে গুঁড়ো হচ্ছে মানসিকতা: শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ ও আত্মহত্যার রূঢ় বাস্তবতা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বর্তমান সময়ের শিক্ষার্থীদের জন্য পড়াশোনার চাপ কেবল মাত্র এক ধরনের বাধা নয়, বরং অনেক ক্ষেত্রে তা মানসিক স্বাস্থ্যকে ভেঙে দেওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে দেখা দিচ্ছে। বাংলাদেশে কিশোর-কিশোরী থেকে শুরু করে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উদ্বেগ, হতাশা ও আত্মহত্যার প্রবণতা বাড়ছে alarming মাত্রায়, যার পেছনে অন্যতম বড় কারণ হচ্ছে অতিরিক্ত শিক্ষাগত চাপ।
একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন বিভিন্ন পরীক্ষার, প্রজেক্টের এবং কোচিংয়ের চাপের মধ্যে দিশেহারা। শুধু তাই নয়, অভিভাবকদের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও সামাজিক প্রত্যাশাও তাদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে, যা মানসিক ভারসাম্যকে বিঘ্নিত করছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় পাওয়া গেছে, অধিক চাপের কারণে শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কের রাসায়নিক সামঞ্জস্য নষ্ট হয়, যার ফলে হতাশা এবং আত্মহত্যার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই সংকট মোকাবেলায় শুধু শিক্ষাব্যবস্থার পরিবর্তন নয়, পরিবার ও সমাজের মনোভাবের পরিবর্তনও জরুরি।
ক্লাসরুমে শুধুমাত্র ফলাফল নিয়েই ভাবার পরিবর্তে শিক্ষকদের উচিত শিক্ষার্থীদের আবেগ ও মানসিক সুস্থতা গুরুত্ব দেওয়া। একইসঙ্গে, স্কুল-কলেজে মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ক পরামর্শক থাকলে শিক্ষার্থীরা তাদের মানসিক সমস্যার কথা সহজে প্রকাশ করতে পারবে।
পরিবারে একটি উন্মুক্ত ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলা প্রয়োজন, যেখানে সন্তানরা তাদের হতাশা ও চাপ সম্পর্কে কথা বলতে ভয় পাবে না।
শিক্ষার্থীদের শেখাতে হবে যে, জীবনে সফলতার মাপকাঠি শুধুমাত্র নম্বর নয়, বরং শেখার ভালো মানসিকতা।
সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতিদিনের তুলনা ও প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের উপর অতিরিক্ত মানসিক চাপ সৃষ্টি করছে, যা মোকাবেলায় সচেতনতা জরুরি। পড়াশোনার পরিবেশ যেন হয় উৎসাহব্যঞ্জক, চাপমুক্ত এবং মানসিক শান্তি দেওয়া।
শিক্ষা কখনোই হতাশার কারণ হওয়া উচিত নয়—এটি জীবন গঠনের এক অনন্য মাধ্যম। সমাজ, পরিবার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একযোগে কাজ করলে শিক্ষার্থীদের মানসিক চাপ ও আত্মহত্যার ঝুঁকি কমানো সম্ভব।
এখন সময় এসেছে ভাবার—আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা কি সত্যিই শিক্ষার্থীদের জীবন গড়ার জায়গা, নাকি তাদের মানসিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করার কারণ..!!
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।