ফেসিয়ালে বিপদ ডেকে আনছেন না তো? জেনে নিন বিজ্ঞান কী বলছে!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আজকের যুগে ত্বকের পরিচর্যা নিয়ে সচেতনতা যেমন বাড়ছে, তেমনি ফেসিয়াল বা ক্লিনআপের জনপ্রিয়তাও আকাশচুম্বী। নগরের বাজার থেকে শুরু করে ছোট শহর পর্যন্ত, মেয়েরা মাসে অন্তত একবার স্কিন কেয়ার পার্লারে গিয়ে ফেসিয়াল করাই যেন নিয়ম হয়ে গেছে। আর তার পেছনে আছে সুন্দর, ঝকঝকে ত্বকের স্বপ্ন। তবে প্রশ্ন উঠতেই পারে—প্রতিমাসে ফেসিয়াল কি সত্যিই ত্বকের জন্য ভালো? নাকি এতে লুকিয়ে আছে কিছু অজানা ঝুঁকি?
ত্বকের প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে পরিচর্যা-
ত্বক মূলত চার ধরনের: সাধারণ, শুষ্ক, তৈলাক্ত, এবং সংবেদনশীল। প্রতিটি ত্বকের যত্নের পদ্ধতিই আলাদা হওয়া উচিত। কিন্তু প্রায়শই দেখা যায়, ফেসিয়াল প্রক্রিয়াগুলো একই রকমে প্রয়োগ করা হয়, যা সব ধরনের ত্বকের জন্য উপযোগী নয়। যেমন, অতিরিক্ত স্ক্রাবিং বা রাসায়নিক মাস্ক সংবেদনশীল ত্বকে জ্বালা, লালচে ভাব বা একজিমার কারণ হতে পারে।
বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণে ফেসিয়ালের প্রভাব -
ত্বক বিশেষজ্ঞদের মতে, ফেসিয়ালের মূল উদ্দেশ্য হলো মৃত ত্বক অপসারণ করা, ত্বকের ছিদ্র পরিষ্কার রাখা এবং আর্দ্রতা বৃদ্ধি করা। কিন্তু ঘন ঘন এই প্রক্রিয়া করলে ত্বকের প্রাকৃতিক বাধা (বারিয়ার) ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ফলে ত্বক হয়ে যায় সহজে সংবেদনশীল ও সংক্রমণের প্রতি ঝুঁকিপূর্ণ। স্টিমিংয়ের মাধ্যমে খোলা রোমছিদ্র থেকে আর্দ্রতা উঠে যেতে পারে, যা সঠিক যত্ন না নিলে ত্বকের শুষ্কতা বাড়ায়।
প্রাকৃতিক যত্ন ও অভ্যাসের গুরুত্ব- ত্বক ভালো রাখতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিয়মিত পরিমিত পরিচ্ছন্নতা, পর্যাপ্ত পানি পান, সুষম খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত ঘুম। স্কিন কেয়ার রুটিনে অতিরিক্ত রাসায়নিক প্রোডাক্ট ব্যবহার না করাই ভালো। এছাড়া সূর্যের ক্ষতিকর আলোর থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেওয়া অপরিহার্য।
কখন ফেসিয়াল করাটা উপকারী?
ত্বকের স্বাস্থ্য ঠিক থাকলে প্রতি দুই-তিন মাস পর ফেসিয়াল করাই যথেষ্ট। এতে ত্বকের প্রাকৃতিক পুনর্গঠন হয় এবং অতিরিক্ত ক্ষতি হয় না। যারা ত্বকের সমস্যা যেমন ব্রণ, ফুসকুড়ি, বা অতিরিক্ত তৈলাক্ততা নিয়ে ভোগেন, তারা অবশ্যই ত্বক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে ফেসিয়ালের ধরন ও সময় নির্ধারণ করবেন।
অতিরিক্ত ফেসিয়াল এর ঝুঁকি ও প্রতিকার- প্রতিমাসে ফেসিয়াল করলে বিশেষ করে সংবেদনশীল ত্বকে দেখা দিতে পারে অস্বাভাবিক লালচে ভাব, খুসকি, ব্রণের প্রকোপ বাড়া, এমনকি স্থায়ী ক্ষতিও। তাই নিজের ত্বকের ভাষা শুনতে হবে। ফেসিয়ালের পর ময়েশ্চারাইজার ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি।
ত্বকের যত্নে ফেসিয়াল এক ধরনের সহায়ক হাতিয়ার, তবে এটি প্রাথমিক পরিচ্ছন্নতা বা দৈনন্দিন রুটিনের বিকল্প নয়। নিজের ত্বকের ধরন ও প্রয়োজন বুঝে, প্রয়োজনীয় ব্যবধান ও সঠিক পদ্ধতিতে ফেসিয়াল করাই স্বাস্থ্যকর ও কার্যকরী। সুন্দর ত্বক পেতে প্রয়োজন ধৈর্য, সঠিক তথ্য এবং নিয়মিত যত্ন।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।