শিশুদেরও হতে পারে মানসিক বিপর্যয়, জেনে নিন কারণ

শিশুদেরও হতে পারে মানসিক বিপর্যয়, জেনে নিন  কারণ
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

শিশুদের মনের জগৎ অত্যন্ত সংবেদনশীল ও পরিবর্তনশীল। এই শৈশবকালেই শিশুর ব্যক্তিত্ব, আত্মবিশ্বাস এবং মানসিক স্থিতিশীলতার ভিত্তি তৈরি হয়। কিন্তু এই সূক্ষ্ম পর্বে অভিভাবকদের চিৎকার ও কঠোর শব্দের প্রভাব অনেক সময় শিশুর ভবিষ্যত জীবনে গভীর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এটি শুধু শৈশবের একটি ক্ষুদ্র সমস্যা নয়, বরং একটি গুরুতর সামাজিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের চ্যালেঞ্জ।

বিজ্ঞানীরা জানান, শিশুরা যখন অভিভাবকদের উচ্চস্বরে ক্রমাগত সমালোচনার শিকার হয়, তখন তাদের মস্তিষ্কে 'কর্টিসল' নামক স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা বাড়তে থাকে। কর্টিসল দীর্ঘমেয়াদী উচ্চমাত্রায় থাকার ফলে স্মৃতি, শেখার ক্ষমতা ও আবেগ নিয়ন্ত্রণে বিঘ্ন ঘটায়। শিশুদের স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়, যা ভবিষ্যতে মানসিক রোগ যেমন উদ্বেগ, বিষণ্নতা এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতার সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে।

 

শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্য ও মস্তিষ্ক বিকাশের উপর অভিভাবকের আচরণের গুরুত্ব অপরিসীম। গবেষণা স্পষ্ট করে, যে শিশুরা ইতিবাচক মনোভাব ও স্নেহময় পরিবেশে বড় হয়, তাদের মধ্যে আত্মসম্মান ও আত্মনির্ভরতার মাত্রা অনেক বেশি থাকে।

অন্যদিকে, চিৎকারের পরিবেশে বড় হওয়া শিশুদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব, শিখন প্রবণতা কমে যাওয়া এবং মানসিক চাপ বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা যায়।

 

সামাজিক পর্যায়ে, বাংলাদেশের বেশিরভাগ পরিবারের মধ্যে এই সমস্যা দেখা যায়। দ্রুত মানসিক চাপ সামলানো না পারা, জীবনের অনিশ্চয়তা এবং সামাজিক বৈষম্যের কারণে অভিভাবকরা অবশত চিৎকার করতে বাধ্য হন। কিন্তু এই আচরণ শিশুর জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর হতে পারে। শিশুর মানসিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য দরকার ধৈর্য, ভালোবাসা এবং সঠিক নির্দেশনা।

 

এখন প্রশ্ন, আমরা কীভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করবো? মনস্তাত্ত্বিকরা সুপারিশ করেন, অভিভাবকদের উচিত শিশুর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন, ভুল হলে শান্তভাবে বোঝানো এবং শিশুর চেষ্টাকে উৎসাহ দেওয়া। শিক্ষাব্যবস্থায়ও মানসিক সুস্থতা ও সহানুভূতি শেখানো প্রয়োজন, যা ভবিষ্যতের সুস্থ সমাজ গঠনে সহায়ক হবে।

 

সংক্ষেপে, অভিভাবকের চিৎকার শিশুর জীবনে একটি নীরব দুর্ভোগের মতো, যার ক্ষতি চোখে দেখা যায় না কিন্তু মনের গভীরে থাকে। প্রতিটি অভিভাবক ও সমাজের দায়িত্ব হলো শিশুদের মনের দিগন্ত সুস্থ ও উজ্জ্বল রাখা, যাতে তারা পরিপূর্ণ আত্মবিশ্বাস নিয়ে বড় হতে পারে। কারণ শিশুর মনের শান্তি ও সঠিক বিকাশই দেশের সাফল্যের মূল চাবিকাঠি।

শিশুর মনকে বুঝুন, তাদের ভাষা শুনুন, আর 

 

চিৎকারের বদলে ভালোবাসার কথা বলুন—তাহলেই গড়ে উঠবে একটি শক্তিশালী ও সফল ভবিষ্যত।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ