ছাপানো টাকায় ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণঃ মূল্যস্ফীতি বাড়ার শঙ্কা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
গত অর্থবছরের শেষ সময়ে বাংলাদেশ সরকার কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ছাপানো টাকায় ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে। সরকারের হিসাবের ঘাটতি মেটাতে এই অর্থায়ন করা হয়েছে। তবে একে নতুন ঋণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে না, বরং পূর্বে পরিশোধিত ঋণের একটি অংশ অন্য খাতে সরিয়ে নিয়ে এই সমন্বয় করা হয়েছে, যার ফলে ছাপানো টাকায় সরকারের ঋণ ২৭ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ছাপানো টাকা বাজারে ছাড়া মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। যার চাক্ষুস প্রমাণ হিসিবে বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের পতন সময়কালে মূল্যস্ফীতির ১১.৬৬% হারকে উল্লেখ করছেন বিশ্লেষকরা। একই সাথে এই রেকর্ড সতর্কবার্তা হিসেবে দেখার পরামর্শ দিয়েছেন ওনারা।
চলতি বছরের মে মাসে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে সরকারের নেওয়া ঋণ পরিশোধের স্থিতি ছিল ৫০ হাজার কোটি টাকা। ১৫ই জুন এই স্থিতি কমে ২৩ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। এর অর্থ হলো, সরকার ২৭ হাজার কোটি টাকা ঋণ পরিশোধ কমিয়ে ঘাটতি সমন্বয় করেছে, যার ফলস্বরূপ ছাপানো টাকায় সরকারের ঋণ কমে যাওয়ার পরিবর্তে বেড়েছে।
১৫ই মে থেকে ১৫ই জুন পর্যন্ত হিসাবে নিলে ছাপানো টাকায় সরকারের ঋণ ৩৫ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।
তবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এই ছাপানো টাকার ঋণের বিপরীতে ট্রেজারি বিল ইস্যু করে বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানিগুলোর কাছে বিক্রি করে বাজার থেকে টাকা তুলে নিচ্ছে। এর ফলে এই ঋণগুলো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিবর্তে ব্যাংক ও ফাইন্যান্স কোম্পানি থেকে নেওয়া ঋণে রূপান্তরিত হচ্ছে।
উল্লেখ্য, প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি হিসাবে টাকার ঘাটতি দেখা দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক তা পরিশোধ করে দেয়। এক্ষেত্রে সোনালী ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। যদি সরকারের হিসাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা না থাকে, তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঋণ সৃষ্টি করে সোনালী ব্যাংককে সেই অর্থ সরবরাহ করে।
একইভাবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক যখন সরকারের পক্ষে লেনদেন করে এবং সরকারের হিসাবে পর্যাপ্ত অর্থ না থাকে, তখন বাংলাদেশ ব্যাংক ঋণ সৃষ্টি করে লেনদেন নিষ্পত্তি করে।
এদিকে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সূত্র জানিয়েছে, ১৫ই জুন পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারের হিসাবে পর্যাপ্ত টাকা ছিল না, কিন্তু লেনদেনের চাপ ছিল। এ কারণে আগের পরিশোধিত অর্থ থেকে নতুন করে সরকারকে ঋণ দেওয়া হয়েছে, ফলে সরকারের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিশোধ কমেছে এবং ঋণের স্থিতি বেড়েছে।
বিদায়ী অর্থবছরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক মন্দার কারণে রাজস্ব আয় কম হওয়ায় সরকারকে বাড়তি ঋণ নিতে হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।