অস্থির জীবনে স্থিরতা নিয়ে আসার অভিনব কৌশল,জেনে নিন এখনি

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আমাদের শরীরের মতোই মনও একটি 'সিস্টেম'—যেটি সঠিক নিয়ন্ত্রণের অভাবে ছড়িয়ে পড়তে পারে অস্থিরতা, উদ্বেগ এবং মানসিক অশান্তি। অথচ বৈজ্ঞানিক গবেষণা বলছে, মনের নিয়ন্ত্রণই মানুষের জীবনের অনেক সাফল্য, আত্মবিশ্বাস এবং সুখানুভূতির মূল চাবিকাঠি।
মানসিক নিয়ন্ত্রণ কী?
মানসিক নিয়ন্ত্রণ বলতে বোঝানো হয় নিজের চিন্তা, আবেগ ও প্রতিক্রিয়ার ওপর সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ রাখা। এটি এমন একটি মানসিক সক্ষমতা যা মানুষকে তার মনোযোগ, আচরণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে সজাগ করে তোলে। মনোবিদ্যার ভাষায় একে 'self-regulation' বা 'cognitive control' বলা হয়।
বৈজ্ঞানিক ভিত্তি
নিউরোসায়েন্সের দৃষ্টিতে, মস্তিষ্কের 'prefrontal cortex' নামক অঞ্চলটি আবেগ ও সিদ্ধান্তের নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম এবং মানসিক সচেতনতা (mindfulness) মস্তিষ্কের এই অংশকে সক্রিয় রাখতে সাহায্য করে। এভাবে ব্যক্তির মন আরও স্থির ও কার্যকর হয়।
মানসিক নিয়ন্ত্রণের প্রভাব
⇨ চাপ ও উদ্বেগ কমায়: যখন আমরা মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখি, তখন চাপের মধ্যে থেকেও পরিস্থিতি মোকাবিলা সহজ হয়।
⇨ সম্পর্ক উন্নয়ন করে: আবেগকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে আমরা অন্যদের সঙ্গে সহজে যোগাযোগ করতে পারি।
⇨ সৃজনশীলতা বাড়ায়: মন যখন শান্ত থাকে, তখন চিন্তাশক্তি এবং কল্পনাশক্তি অধিক কার্যকর হয়।
⇨ সিদ্ধান্ত গ্রহণে স্পষ্টতা আনে: অনুভূতির চাপে ভুল সিদ্ধান্ত না নিয়ে যুক্তিভিত্তিক পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়।
বাস্তবিক প্রয়োগ কীভাবে?
মানসিক নিয়ন্ত্রণ অর্জনের জন্য প্রতিদিনের জীবনে কিছু কৌশল অনুশীলন করা জরুরি, যেমন—
১। দিনের শুরুতে ৫-১০ মিনিট মেডিটেশন।
২। অহেতুক প্রতিক্রিয়া না দিয়ে ১০ সেকেন্ড থেমে ভাবা।
৩। নিয়মিত ঘুম ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস।
৪। নিজের অনুভূতি লিখে রাখা (journaling)।
মানসিক নিয়ন্ত্রণ কোনো অলীক কৌশল নয়; বরং এটি প্রতিদিনের চর্চার মাধ্যমে গড়ে তোলা যায়। আত্মনিয়ন্ত্রণ শেখা মানে শুধু মনের শান্তি অর্জন নয়—বরং নিজের জীবনকে প্রভাবশালী, সংগঠিত এবং অর্থবহ করে তোলা।
মন যখন নিজের আয়ত্তে, তখনই জীবনের প্রতিটি অধ্যায় হয়ে ওঠে আরও শক্তিশালী ও সার্থক।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।