পিঁপড়ার ভয়ংকর স্ট্র্যাটেজি, গবেষণায় বিজ্ঞানীদের চোখ কপালে!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
ক্ষুদ্র এক প্রাণী, কিন্তু তার কৌশলে রয়েছে বিশাল এক জ্ঞানের ইশারা। মানুষ আজও যেটা গবেষণাগারে বুঝে উঠতে সময় নেয়, তা পিঁপড়া প্রয়োগ করে বহু আগেই—তা-ও নিখুঁতভাবে!
মানুষ যতই আধুনিক যন্ত্র আর প্রযুক্তি আবিষ্কার করুক না কেন, প্রকৃতির একটি বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ আচরণ দেখলেই স্পষ্ট হয়ে যায়—আমরা এখনও অজানার মাঝে খুবই সামান্য জানি। মহান আল্লাহ তা'আলা কুরআনের সূরা বনী ইসরাঈলে স্পষ্টভাবে বলেন, "তোমাদেরকে সামান্য জ্ঞানই দান করা হয়েছে।"
এ বক্তব্য নতুন করে উপলব্ধি হয় যখন আমরা প্রকৃতির অনন্য কিছু রহস্য উদঘাটন করি, বিশেষ করে যখন তা আসে একদম ক্ষুদ্র প্রাণীর কাছ থেকে।
একটি চমকপ্রদ বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ এসেছে ছোট্ট এক জীব—পিঁপড়া—কে কেন্দ্র করে। এই সামান্য দেখতে প্রাণীটির আচরণে লুকিয়ে আছে এক অসাধারণ বিজ্ঞান।
প্রতি বছর শীত আসার আগে পিঁপড়ারা খাদ্য সংগ্রহ করে রাখে—যেমন শস্য, বীজ ইত্যাদি। এই খাবারগুলো দীর্ঘ সময় সংরক্ষণের জন্য তারা নির্দিষ্ট কৌশলও গ্রহণ করে। গবেষকরা লক্ষ্য করেন, তারা অনেক বীজ দুই ভাগে ভাগ করে সংরক্ষণ করে যেন সেগুলো ভিজে গিয়ে অঙ্কুরিত না হয়। কারণ একবার বীজ অঙ্কুরিত হলে তা আর খাওয়ার যোগ্য থাকে না।
তবে বিজ্ঞানীদের চোখ কপালে উঠেছিল ধনিয়ার বীজ নিয়ে। দেখা যায়, এই বীজগুলো পিঁপড়ারা সবসময় চার ভাগ করে কেটে রাখে। বিষয়টি প্রথমে অস্বাভাবিক মনে হলেও গবেষণায় উঠে আসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য—ধনিয়ার বীজ শুধু দুই ভাগ করলে তা এখনো অঙ্কুরিত হতে পারে। কিন্তু চার ভাগে ভাগ করলে সেই সম্ভাবনা থাকে না বললেই চলে।
অর্থাৎ, পিঁপড়া ঠিক বুঝতে পারে কোন বীজকে কতটা ভাগ করলে তা দীর্ঘ সময় সংরক্ষণের উপযোগী থাকবে।
তাদের মধ্যে এই জ্ঞান কোথা থেকে এলো? তারা তো গবেষণা করে না, তথ্যভাণ্ডার পড়ে না, কোনো শিক্ষাগত চর্চা নেই। উত্তর একটাই—এই নির্দেশনা
তাদেরকে দেওয়া হয়েছে তাদের স্রষ্টার পক্ষ থেকে।
আমরা মানুষরা নিজেদের আধুনিকতা, প্রযুক্তি আর বুদ্ধিমত্তা নিয়ে গর্ব করি। কিন্তু একবারও ভেবে দেখি না—আমাদের এই জ্ঞানও সীমিত। একদিকে আমরা মহাকাশে রকেট পাঠাই, অন্যদিকে পিঁপড়ার মতো এক সাধারণ প্রাণী প্রকৃতির রহস্যময় জ্ঞানের এমন নিখুঁত প্রয়োগ করে যে, তাতে বিজ্ঞানীরাও চমকে ওঠে।
এই ঘটনা কেবল বিস্ময় তৈরি করে না, বরং আমাদের মনে প্রশ্ন তোলে—আমরা কি সত্যিই জানি সবকিছু? নাকি আমাদের জ্ঞান আসলে স্রষ্টার দেওয়া সীমিত এক উপহার?
পিঁপড়ার মতো এক ক্ষুদ্র প্রাণী যখন তার প্রয়োজনমতো জ্ঞান নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে নিখুঁতভাবে, তখন মানুষ হয়ে আমাদেরও ভাবা উচিত—আমরা কতটা সঠিকভাবে ব্যবহার করছি আমাদের বুদ্ধি ও বিবেককে?
সৃষ্টির প্রতিটি কণা স্রষ্টার নিখুঁত পরিকল্পনার প্রমাণ। আর এই উপলব্ধিই মানুষকে ফিরিয়ে নেয় সেই মূল জিজ্ঞাসার দিকে—যিনি এই জ্ঞান দিয়েছেন, তাঁর প্রতি আমাদের দায়িত্বটাই বা কতটা পালন করছি আমরা?
সংক্ষেপে, জ্ঞান বড় হয়ে ওঠে যখন তা বিনয় শেখায়। আর প্রকৃত জ্ঞান তো সেই, যা আমাদেরকে সৃষ্টিকর্তার মহত্ব বুঝতে সাহায্য করে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।