ফলে ওয়াক্সিং করার কারণ, জেনে নিন ঝুঁকি না নিরাপদ!

ফলে ওয়াক্সিং করার কারণ, জেনে নিন ঝুঁকি না নিরাপদ!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

বাজারে ঝলমলে চকচকে ফল দেখতে যেমন চোখে লাগে, তেমনই সেখানে একটা প্রশ্ন থেকেই যায়—ফলের গায়ে যে চকচকে মোম লাগানো , তা কতটা নিরাপদ? ফলের তাজা ভাব ও আয়ু বাড়ানোর জন্য ওয়াক্সিং বা মোম মাখানোর প্রক্রিয়া বহুদিন ধরে চালু আছে। তবে এই ওয়াক্সিংয়ের পেছনে কি শুধু সৌন্দর্য? নাকি রয়েছে স্বাস্থ্যগত কিছু ঝুঁকিও?

ওয়াক্সিং করার কারণ  -

ফলের বাইরের অংশে একটি পাতলা মোমের আস্তরণ দেওয়া হয়, যা ফলকে শুষ্কতা, ব্যাকটেরিয়া এবং ছত্রাক থেকে রক্ষা করে। এতে ফল অনেকদিন পর্যন্ত ফ্রেশ থাকে, সহজে পচে যায় না এবং পরিবহনেও টিকে থাকে। বিশেষ করে আম, পেয়ারা, আপেল, কমলা ইত্যাদি ফলের ক্ষেত্রে এই প্রক্রিয়া বহুল ব্যবহৃত। ওয়াক্সিং ফলের পুষ্টিগুণে কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না, তবে এর প্রকারভেদ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। 

 

মোমের ধরন ও স্বাস্থ্যগত প্রভাব -

✔প্রাকৃতিক মোম যেমন কার্নুবা মোম (গাছ থেকে প্রাপ্ত), শেলাক, এবং প্যারাফিন সাধারণত খাদ্য নিরাপদ হিসেবে বিবেচিত। 

 

✘ কিন্তু সস্তা ও অবৈধ রাসায়নিক মোমের ব্যবহার স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়। এই ধরনের রাসায়নিক মোম ত্বকে আলার্জি, চুলকানি, অথবা দীর্ঘমেয়াদে শ্বাসকষ্টের মতো সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে যারা ত্বক ও শ্বাসনালীর রোগে আক্রান্ত, তাদের জন্য এই ঝুঁকি বাড়ে।

 

ফল ধোয়ার সময় মোম কেমন প্রভাব ফেলে?

ওয়াক্সিংয়ের মোম খুব সহজে পানি দিয়ে ধুয়ে যায় না। ফলে, ফল ধোয়ার সময় সাধারণ জল এই মোম পুরোপুরি সরাতে পারে না, এবং তার সঙ্গে থাকা দূষক বা ব্যাকটেরিয়াও থেকে যেতে পারে। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত মোমযুক্ত ফল খাওয়ার ফলে শরীরে ক্ষতিকর রাসায়নিকের সঞ্চয় হতে পারে। বিশেষত শিশু ও প্রবীণদের ক্ষেত্রে এই সমস্যা গুরত্বপূর্ণ।

 

যেভাবে  নিরাপদ থাকবো-

⇨ ফল কেনার সময় খুব বেশি চকচকে ও মোটা মোমযুক্ত ফল এড়িয়ে চলুন।

⇨ ফল ভালোভাবে ধুয়ে নিন, সম্ভব হলে লবণ বা ভিনেগার মিশ্রিত পানি ব্যবহার করুন।

⇨ প্রাকৃতিক ও অপ্রসেসড ফল বেছে নিন, যেখানে ওয়াক্সিং সীমিত।

⇨ বাজারজাত ফলের উৎস ও মান যাচাই করুন।

 

বিজ্ঞান যা বলে-

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক খাদ্য নিরাপত্তা সংস্থা অনুমোদিত ওয়াক্সিং মোম ব্যবহারের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যঝুঁকি কম বলেছে। 

তবে অবৈধ ও নিম্নমানের রাসায়নিক ব্যবহারে সতর্ক থাকতে হবে। ফলের স্বাভাবিক স্থায়িত্ব বাড়ানো স্বাস্থ্যকর হলেও, স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতা অপরিহার্য।

 

ফলের গায়ে ওয়াক্সিং—এটি একদিকে ফলকে লম্বা সময় সতেজ রাখার প্রযুক্তি, অন্যদিকে আমাদের স্বাস্থ্যরক্ষার জন্য সতর্কতাও দাবি করে। তাই চকচকে ফলের আড়ালে ঝুঁকি না নিয়ে, নিরাপদ পদ্ধতিতে ফল খাওয়া সব সময়ই বুদ্ধিমানের কাজ। 

আপনার খাবার থেকে স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমাতে সচেতন থাকুন, ভালো থাকুন।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ