চালের মূল্যবৃদ্ধিতে কে দায়ী? মিল মালিক নাকি বাজার সংকট

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
চাল নিয়ে দেশে আবারও অস্থিরতা। বোরো মৌসুম শেষে ধানের সরবরাহ বাড়লেও আশানুরূপভাবে কমেনি চালের দাম। মোটা চাল ৫৫ টাকা, আটাশ ৬৫, মিনিকেট ও নাজিরশাইল ৭৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ৫০ কেজির বস্তায় দাম বেড়েছে ৩৫০-৫০০ টাকা পর্যন্ত। রাজধানীর উত্তর বাড্ডা ও কাওরানবাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে চাহিদামতো চাল নেই, মিলাররা নির্ধারিত দামে চাল সরবরাহ করছেন না, এমন অভিযোগ করছেন বিক্রেতারা।
পরিকল্পনা কমিশনের জিইডি জুলাইয়ের রিপোর্ট বলছে, দেশে সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি কমলেও চালের মূল্যবৃদ্ধি এককভাবে চাপ সৃষ্টি করছে। জুন মাসে চালের মূল্যস্ফীতি ছিল ১৫ শতাংশ। অথচ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বোরো মৌসুমে ৫০ লাখ হেক্টর জমিতে চাষাবাদ হয়েছে এবং লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ২ কোটি ২৬ লাখ টন ধান উৎপাদনের আশা করা হচ্ছে—যা গতবারের চেয়ে ১৬ লাখ টন বেশি।
তবে মাঠ পর্যায়ের কৃষকরা বলছেন ভিন্ন কথা। বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের কৃষকরা বলছেন, সেচ, সার ও ডিজেলের খরচ বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে। খুচরা বাজারে বাড়তি দামে সার কিনতে বাধ্য হয়েছেন তারা, অথচ মিলাররা ধানের দাম কম রেখে লাভ করছেন বেশি। ফলে কৃষক ধান বিক্রি করছেন কম দামে, আবার চাল কিনছেন বেশি দামে।
সরকারিভাবে বোরো ধান ও চাল সংগ্রহ চলছে। ৩৬ টাকা কেজিতে ধান এবং ৪৯ টাকা কেজিতে চাল কেনা হচ্ছে। পাশাপাশি সরকার চার লাখ টন চাল আমদানি করবে এবং বেসরকারিভাবে আরও পাঁচ লাখ টন আমদানির অনুমতি দেয়া হবে। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম কম থাকায় আমদানির মাধ্যমে স্থিতিশীলতা আনা সম্ভব।
তবে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) মনে করে, আমদানিই সমাধান নয়। সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইনের মতে, ব্যবসায়ীরা নিজেরাই মজুত করে রাখেন চাল, ফলে আমদানির আগ্রহ কম। এলসি খোলা নিয়েও নেই কোনো তদারকি। উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণের প্রতিটি ধাপে কঠোর নজরদারি আর অসাধু ব্যবসায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত না হলে চালের বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয় বলেও মনে করেন তিনি।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।