সাইবার হামলার আশঙ্কায় বাংলাদেশ ব্যাংকের সতর্কতা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বাংলাদেশে একটি বড় ধরনের সাইবার হামলার আশঙ্কায় দেশের সব ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং ডিজিটাল পেমেন্ট সেবাদাতাদের জন্য উচ্চ সতর্কতা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্ভাব্য হামলার ক্ষয়ক্ষতি কমাতে এবং সাইবার নিরাপত্তা জোরদার করতে জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে।
ধবার (৩০ জুলাই) বাংলাদেশ ব্যাংকের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগ থেকে পাঠানো এক চিঠিতে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে।
চিঠিটি দেশের সব তফসিলি ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং পেমেন্ট সেবা প্রদানকারীদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, "আগামী দিনে দেশের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামো (সিআইআই), ব্যাংক, আর্থিক খাত, স্বাস্থ্যসেবা, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সাইবার হামলার ঝুঁকিতে রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র থেকে এমন আশঙ্কার কথা উঠে এসেছে।"
সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারলে দেশের আর্থিক ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিঘ্ন ঘটতে পারে বলেও সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনাঃ
বাংলাদেশ ব্যাংক সম্ভাব্য সাইবার হামলা প্রতিরোধে ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডারদের জন্য জরুরি ভিত্তিতে নিম্নলিখিত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে বলেছে:-
১. সিস্টেম আপডেটঃ সার্ভার, ডেটাবেজ ও আইটি সিস্টেম নিয়মিত আপডেট করতে হবে।
২. অ্যাক্সেস নিয়ন্ত্রণঃ অপ্রয়োজনীয় পোর্ট বন্ধ করে অনুমতি-ভিত্তিক অ্যাক্সেস নিশ্চিত করতে হবে।
৩. ডেটা ব্যাকআপঃ সংরক্ষিত ডেটার গুরুত্ব অনুযায়ী নিয়মিত ব্যাকআপ ও রিস্টোর ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে '৩-২-১' ব্যাকআপ কৌশল অনুসরণে উৎসাহিত করা হয়েছে।
৪. এনক্রিপশনঃ ডেটা স্থানান্তর, সংরক্ষণ ও প্রক্রিয়াজাত করার ক্ষেত্রে এনক্রিপশন বাধ্যতামূলক।
৫. মাল্টিফ্যাক্টর অথেন্টিকেশন-এমএফএঃ গুরুত্বপূর্ণ সব সিস্টেমে এমএফএ চালু করতে হবে।
৬. নিরাপত্তা মনিটরিং টুলসঃ নিরাপত্তা নজরদারির জন্য অন্যান্য সিকিউরিটি টুলস ব্যবহারে গুরুত্বারোপ করা হয়েছে।
৭. সফটওয়্যার কার্যকারিতাঃ এন্ডপয়েন্ট ডিটেকশন অ্যান্ড রেসপন্স (ইডিআর), অ্যান্টিভাইরাস ইত্যাদি সফটওয়্যারের হালনাগাদ এবং কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে হবে।
৮. ইনসিডেন্ট রেসপন্স প্ল্যানঃ সম্ভাব্য হামলার ঘটনা মোকাবিলায় ইনসিডেন্ট রেসপন্স প্ল্যান এবং বিশেষায়িত টিম প্রস্তুত রাখতে হবে।
৯. সন্দেহজনক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণঃ সন্দেহজনক লগইন, ফাইল পরিবর্তন বা এক্সটারনাল সংযোগ মনিটর করতে এবং প্রয়োজনে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
১০. রিমোট অ্যাক্সেস রিভিউঃ রিমোট অ্যাক্সেস, ভিপিএন ও প্রিভিলেজড অ্যাকাউন্টস নিয়মিত রিভিউ করে প্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ আরোপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
১১. দ্রুত রিপোর্টঃ সাইবার হামলার কোনো লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত ব্যবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক কে জানাতে হবে।
১২. ২৪/৭ নিরাপত্তা মনিটরিংঃ ২৪/৭ ভিত্তিতে নিরাপত্তা মনিটরিং সেন্টার পরিচালনায় প্রয়োজনীয় জনবল নিশ্চিত করতে হবে।
১৩. সিস্টেমের উচ্চ সক্ষমতাঃ সিস্টেমের উচ্চ সক্ষমতা ও স্থায়িত্ব বজায় রাখতে লোড ব্যালেন্সার স্থাপন ও বিকল্প পরিকল্পনা প্রস্তুত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
১৪. দুর্যোগ পুনরুদ্ধার পরিকল্পনাঃ প্রতিষ্ঠানের বিজনেস কনটিনিউটি প্ল্যান অ্যান্ড ডিজাস্টার রিকভারি প্ল্যান হালনাগাদ করে তা বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক এই নির্দেশনায় সময়ক্ষেপণ না করে দ্রুত সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।