এক প্লেট 'মেনেমেন' কী এমন আছে, যা খেয়ে পাগল বিশ্ব?

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
যখন সকালের নাস্তা নিয়ে দোটানায় পড়েন, তখন এক বাটি 'মেনেমেন' হতে পারে শরীর ও মনের পরিপূর্ণ জাগরণ। ডিম, টমেটো, পেঁয়াজ আর কাঁচা মরিচ—এই চারটি উপকরণে তৈরি হয় একটি অতিসাধারণ অথচ পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ তুর্কি খাবার, যার নাম মেনেমেন। যুগের পর যুগ ধরে তুরস্কে এটি শুধু সকাল নয়, বরং একরকম খাদ্য-সংস্কৃতির পরিচয় বহন করে আসছে।
তুরস্কের এই ঐতিহ্যবাহী পদটি শুধুই মুখরোচক নয়, পুষ্টিগুণেও অনন্য। রান্নার প্রক্রিয়াটিও বেশ বৈজ্ঞানিক। প্যানে ধীরে ধীরে তেল দিয়ে প্রথমে পেঁয়াজ, এরপর টমেটো ও মরিচ সাঁতলানো হয়।
টমেটো থেকে নির্গত লাইকোপেন শরীরের কোষের ক্ষয় রোধে ভূমিকা রাখে, এবং সেইসঙ্গে যুক্ত হয় ডিমের উচ্চ মানের প্রোটিন। সবশেষে ডিম ফাটিয়ে উপকরণের সঙ্গে মিশিয়ে হালকা নাড়াচাড়া করলেই তৈরি মেনেমেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদে যে উপাদানগুলো ব্যবহৃত হয়, তা আমাদের শরীরে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, প্রোটিন, ভিটামিন এ, সি এবং বি কমপ্লেক্স সরবরাহ করে। পাশাপাশি এটি কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ, ব্রেইনের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি ও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষুধা প্রশমনে সহায়ক।
মেনেমেনের জনপ্রিয়তা এখন আর কেবল ইস্তানবুল কিংবা ইজমিরে সীমাবদ্ধ নয়। মধ্যপ্রাচ্য ছাড়িয়ে ইউরোপ, আমেরিকা এমনকি এশিয়ার অনেক দেশেই এটি 'হেলদি ব্রেকফাস্ট' হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছে।
রান্নার সরলতা এবং পুষ্টিমান—এই দুই দিক থেকেই এটি হয়ে উঠেছে একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্যবান্ধব খাবার।
একজন রান্না বিশ্লেষকের ভাষায়, "মেনেমেন হলো সেই ধরণের খাবার, যা স্বাদ ও স্বাস্থ্য—দুটোকেই একসঙ্গে ধারণ করে। এটি কেবল একটি রেসিপি নয়, বরং একটি সুশৃঙ্খল খাদ্য-প্রক্রিয়া যা তুর্কি খাদ্য ঐতিহ্যের অন্তর্নিহিত শক্তিকে তুলে ধরে।"
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার অনেক ঘরেও এখন মেনেমেন জায়গা করে নিচ্ছে। যারা সকালের নাস্তায় দ্রুত প্রস্তুত স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খুঁজছেন, তাদের জন্য এটি হতে পারে একটি চমৎকার বিকল্প।
শেষ কথা, খাদ্য শুধু পেট ভরায় না—তা সংস্কৃতি, ইতিহাস এবং বিজ্ঞানের সম্মিলিত অভিব্যক্তি। আর তুরস্কের 'মেনেমেন' তারই একটি স্বচ্ছ উদাহরণ।
আপনি যদি খাবারে বৈচিত্র্য, পুষ্টি এবং ঐতিহ্য খুঁজে থাকেন—তাহলে 'মেনেমেন' আপনার পরবর্তী সকালের সঙ্গী হতেই পারে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।