ঘরে বসেই তৈরি করুন 'তুর্কি পিদে' —সহজ রেসিপিতে পাড়ি দিন প্রাচ্যের স্বাদের দেশ!

ঘরে বসেই তৈরি করুন 'তুর্কি পিদে' —সহজ রেসিপিতে পাড়ি দিন প্রাচ্যের স্বাদের দেশ!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

তুরস্কের ঐতিহ্যবাহী খাবারের তালিকায় 'পিদে' এমন একটি নাম, যা একবার চেখে দেখলে ভুলে যাওয়া কঠিন। দেখতে অনেকটা নৌকার আকৃতির মতো, উপরে টপিংসের বাহার—চিজ, মাংস, সবজি বা ডিম—আর নিচে নরম অথচ হালকা ক্রিসপি ডো। এই বিশেষ রুটিটি শুধুই স্বাদের নয়, বরং এর প্রস্তুত প্রণালীতে রয়েছে একধরনের বৈজ্ঞানিক পরিমিতি ও সাংস্কৃতিক ছোঁয়া। আর সেই পিদেই এখন আপনি সহজেই বানাতে পারেন আপনার রান্নাঘরে।

 'পিদে' হচ্ছে মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরেশিয়ান অঞ্চলজুড়ে জনপ্রিয় একধরনের ফ্ল্যাটব্রেড, যার উৎপত্তি ও বিকাশ তুরস্কের অন্দরমহলেই। এর খামির তৈরি হয় ইস্ট, অলিভ অয়েল, দুধ, ও ময়দার সংমিশ্রণে, যা একধরনের পরিপূর্ণ ফারমেন্টেশন প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যায়। ফারমেন্টেশনের এই বৈজ্ঞানিক ধাপটি ডো-কে করে তোলে আরও হালকা, হজমে সহায়ক, আর স্বাদে আরও গভীর।


যেকারণে  ঘরেই বানানো উচিত পিদে :

সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, যেসব খাবার নিজে বানিয়ে খাওয়া হয়, তা শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসম্মতই নয়, বরং মানসিক তৃপ্তিতেও রাখে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব। তাছাড়া, বাজারের রেডিমেড পিদে বা রেস্টুরেন্ট ভার্সনের তুলনায় ঘরে বানানো পিদে আরও কম চর্বি ও সোডিয়ামযুক্ত হয়ে থাকে—যা হৃদয় ও পরিপাকতন্ত্রের জন্য উপকারী।


সহজ উপকরণ, সহজ পদ্ধতি-

পিদে তৈরির জন্য দরকার হয়—ময়দা, ইস্ট, অলিভ অয়েল, দুধ, সামান্য চিনি ও লবণ। খামির তৈরি করে রেখে দিতে হয় ১-২ ঘণ্টা, যাতে তা ফুলে উঠে। এরপর ডো-কে কাঙ্ক্ষিত আকারে ছড়িয়ে উপরে পছন্দমতো টপিংস দিয়ে বেক করে নিলেই তৈরি স্বপ্নের মত পিদে!

পিদে বেকিং-এর সময় তাপমাত্রা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ২০০-২৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা খাবারটিকে দেয় বাহ্যিক ক্রিস্পিনেস আর ভিতরে নরম স্পঞ্জি টেক্সচার, যেটাই একে আলাদা করে তোলে।


পুষ্টিগুণেও সমৃদ্ধ পিদে -

পিদে শুধুমাত্র স্বাদের খনি নয়—এর প্রতিটি উপাদানে রয়েছে পুষ্টির ছোঁয়া। প্রোটিনসমৃদ্ধ মাংস বা ডিমের টপিং, দুধের ক্যালসিয়াম, অলিভ অয়েলের হেলদি ফ্যাট এবং সম্পূর্ণ ডোতে থাকা কার্বোহাইড্রেট—সবকিছু মিলে এটি একটি ভারসাম্যপূর্ণ মিল হিসেবেই ধরা যায়।


রন্ধনশিল্পের এক আন্তর্জাতিক সংস্করণ - 

বিশ্বজুড়ে ফিউশন খাবারের দুনিয়ায় তুর্কি পিদে এখন নিজের জায়গা করে নিচ্ছে। ইউরোপ-আমেরিকার অনেক রাঁধুনিই এটিকে 'তুর্কিশ পিজ্জা' নামে ডেকে থাকেন, যদিও এর স্বাদ ও টেক্সচার অনেক বেশি সূক্ষ্ম ও পরিশীলিত।

 

আজকের এই তথ্যভিত্তিক রান্নার যুগে, 'পিদে' শুধুমাত্র একটি খাবার নয়, বরং একটি অভিজ্ঞতা—যেটা আপনি নিজ হাতে তৈরি করে উপভোগ করতে পারেন সহজ উপকরণ আর কিছুটা ধৈর্য নিয়ে।


বিশ্বের রান্নাঘরে আজ স্থান করে নেওয়া তুর্কি পিদে যেন এক ঐতিহ্যের স্বাদ, যা এখন আপনার হাতেই তৈরি হওয়ার অপেক্ষায়। রান্নার মধ্যে বিজ্ঞান, সংস্কৃতি আর স্বাদ—এই তিনের অনবদ্য মেলবন্ধনের এক বাস্তব উদাহরণ এই খাবারটি।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ