রাগ শুধু মানসিক নয়, শারীরিক বিধ্বস্তুতাও ডেকে আনে—জেনে নিন নতুন গবেষণার চাঞ্চল্যকর তথ্য!

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
আমরা সাধারণত রাগকে দেখি একটি সাধারণ আবেগ হিসেবে—কখনো ক্ষণিক উত্তেজনা, কখনো একরাশ ক্ষোভ। কিন্তু গবেষণা বলছে, আমাদের শরীর রাগকে দেখে একটি হুমকি হিসেবে, আর প্রতিক্রিয়াও দেয় ঠিক তেমনভাবেই—যেমনটি দেয় সংক্রমণ বা আঘাতের সময়।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জার্নাল Psychophysiology-তে প্রকাশিত এক গবেষণায় উঠে এসেছে এক চমকে দেওয়া তথ্য। সেখানে দেখা গেছে, মাত্র কয়েক মিনিটের রাগের প্রতিক্রিয়াতেই শরীরের salivary immunoglobulin A (sIgA) নামক প্রতিরোধক উপাদানের মাত্রা দ্রুত কমে যায়। এই sIgA মূলত মুখগহ্বর ও শ্বাসনালীতে থাকা ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধের প্রাথমিক প্রহরী। এর পরিমাণ কমে গেলে ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীরের লড়াই দুর্বল হয়ে পড়ে।
আরও উদ্বেগজনক তথ্য হলো, রাগের সময় এই সুরক্ষাবলয় ভেঙে পড়ার পর তার প্রভাব থেকে মুক্তি পেতে সময় লাগে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পর্যন্ত—even যদি রাগের আবেগ তখন অনেক আগেই থেমে যায়।
এই প্রভাব শুধুই মানসিক নয়, তা শারীরিকভাবেও পরিমাপযোগ্য। যখন আমরা রেগে যাই, তখন শরীরে নিঃসৃত হয় করটিসল (Cortisol) ও অ্যাড্রেনালিন (Adrenaline) নামক স্ট্রেস হরমোন।
স্বল্পমেয়াদে এগুলো হয়তো শরীরকে যুদ্ধ বা পালানোর জন্য প্রস্তুত করে, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদে এদের প্রভাব ভয়াবহ—
➤ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পায়
➤ দেহে প্রদাহ (inflammation) বাড়ে
➤ ক্ষত নিরাময়ের গতি ধীর হয়
➤ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি অসুস্থতার ঝুঁকি বেড়ে যায় (যেমন হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ)
রাগ একদিকে মানসিক চাপ বাড়ায়, অন্যদিকে শরীরের বিভিন্ন জৈবিক প্রক্রিয়া দুর্বল করে তোলে। মানসিক সুস্থতার কথা চিন্তা করে আমরা যেভাবে রাগ নিয়ন্ত্রণে সচেতন হই, সেভাবে শারীরিক সুস্থতার দিক থেকেও এটি অত্যন্ত জরুরি।
মনোবিদ ও স্বাস্থ্য গবেষকদের মতে, নিয়মিত মেডিটেশন, শ্বাস-প্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ অনুশীলন, পর্যাপ্ত ঘুম ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন রাগ কমাতে এবং এর শারীরিক প্রভাব কমাতে সহায়ক হতে পারে।
রাগের আগুন শুধু সম্পর্কেই ফাটল ধরায় না, নিঃশব্দে আমাদের শরীরেও জ্বালিয়ে দেয় ক্ষয়ের আগুন। তাই রাগ চাপা নয়, বরং বুঝে নিয়ন্ত্রণই হতে পারে সুস্থতা ও দীর্ঘ আয়ুর চাবিকাঠি।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।