হঠাৎ কোমর থেকে পায়ে টান বা ঝিনঝিনি ব্যথা-এটা কি সায়াটিকা? জানুন কারণ ও বাঁচার উপায়!

হঠাৎ কোমর থেকে পায়ে টান বা ঝিনঝিনি ব্যথা-এটা কি সায়াটিকা? জানুন কারণ ও বাঁচার উপায়!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

সায়াটিকা হল এমন একটি অবস্থা, যেখানে কোমরের নীচের অংশ থেকে পা পর্যন্ত নাড়ির পথ বরাবর জ্বলন, ঝনঝনানি বা প্রচণ্ড ব্যথা অনুভূত হয়। এটি মূলত সায়াটিক নার্ভের সঙ্কোচন বা আঘাতের কারণে হয়।

সায়াটিকা কী?

সায়াটিকা মূলত সায়াটিক নার্ভের প্রদাহ বা সংকোচন যার ফলে কোমর, নিতম্ব, পায়ের পেছন বা নিচের অংশে তীব্র ব্যথা হয়। সায়াটিক নার্ভ হলো মানুষের শরীরের সবচেয়ে বড় ও দীর্ঘতম নার্ভ, যা কাধ থেকে পায়ের গোড়ালির নিচ পর্যন্ত বিস্তৃত।
 

সায়াটিকার প্রধান কারণসমূহ

☞ হাড়ের ডিস্ক থেকে নার্ভের চাপে পড়া (Herniated Disc): কোমরের মেরুদণ্ডের মধ্যবর্তী ডিস্ক চাপে পড়ে সায়াটিক নার্ভে ব্যথার সৃষ্টি করে।

☞ স্পাইনাল স্টেনোসিস: মেরুদণ্ডের নার্ভ পাসেজ সংকীর্ণ হয়ে সায়াটিক নার্ভে চাপ পড়া।

☞ পিরিফরমিস সিন্ড্রোম: পিরিফরমিস পেশী সায়াটিক নার্ভের ওপর চাপ প্রয়োগ করলে।

☞ মাংসপেশির আঘাত বা দীর্ঘক্ষণ বসা।

☞ ডায়াবেটিস বা অন্যান্য স্নায়ুর রোগ।
 

সায়াটিকার লক্ষণ

⇨ কোমর থেকে পায়ের পেছন দিক জ্বালা বা ঝনঝনানি অনুভূতি।

⇨ হাঁটতে বা দাঁড়াতে কষ্ট হওয়া।

⇨ পায়ের তলায় বা পায়ের আঙ্গুলে অসাড়তা বা ঝিমুনি।

⇨ পেশীর দুর্বলতা ও চলাচলে সমস্যা।

⇨ ব্যথা কাঁধ, পিঠ বা পায়ের একপাশে বেশি অনুভূত হয়।

 

চিকিৎসা ও প্রতিকার

১. মেডিকেল ট্রীটমেন্ট

⇨ ব্যথানাশক ওষুধ: পেইনকিলার, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ওষুধ (NSAIDs)।

⇨ ফিজিওথেরাপি: বিশেষ ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং মাইক্রো-মুভমেন্ট ব্যথা কমায় এবং মাংসপেশি শক্তিশালী করে।

⇨ স্টেরয়েড ইনজেকশন: প্রদাহ কমাতে প্রয়োজনে।

⇨ শস্ত্রক্রিয়া: খুব অল্প ক্ষেত্রে এবং দীর্ঘস্থায়ী সমস্যায় প্রয়োজন হতে পারে।
 

২. ঘরোয়া যত্ন

⇨ গরম বা ঠান্ডা সেঁকানো।

⇨ নিয়মিত হালকা হাঁটা ও শরীরচর্চা।

⇨ ভারী ওজন এড়ানো ও সঠিক ভঙ্গিতে বসা।
 

প্রতিরোধ ও সচেতনতা

⇨ ভারী জিনিস তোলার সময় সঠিক পদ্ধতি মেনে চলা।

⇨ দীর্ঘক্ষণ একই ভঙ্গিতে বসা বা দাঁড়ানো থেকে বিরত থাকা।

⇨ নিয়মিত ব্যায়াম ও স্ট্রেচিং।

⇨ ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা।
 

বাংলাদেশে সায়াটিকার প্রকোপ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা

দেশে বর্তমানে অনেক মানুষ সায়াটিকা নিয়ে ভুগছেন, বিশেষ করে কম শারীরিক পরিশ্রমের কারণেও এই রোগ বাড়ছে। তবে সঠিক চিকিৎসা, সচেতনতা ও সময়মতো ফিজিওথেরাপি গ্রহণ করলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রোগ নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।

সায়াটিকা স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাপকভাবে ব্যাহত করতে পারে। তবে রোগের কারণ বুঝে সঠিক সময়ে চিকিৎসা শুরু করলে এই সমস্যার সুষ্ঠু সমাধান সম্ভব। আপনার কোমর থেকে পায়ের ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবহেলা না করে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ