কৃষি প্রযুক্তিতে অবদান রেখে দেশ সেরা ড. চাষী

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
বাংলাদেশের কৃষি খাতে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের নতুন অধ্যায় লিখল ড. চাষী। দেশের শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিযোগিতা বিডিএ্যাপস সামিট ২০২৫-এ প্রথম স্থান অর্জন করে এই এআই-চালিত কৃষি অ্যাপ। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে দেশের উদ্ভাবনী ডেভেলপারদের মধ্যে শীর্ষ দশ দল চূড়ান্ত পর্বে অংশ নেয়। ড. চাষী তাদের উদ্ভাবনী সমাধান প্রদর্শনের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে ডেটা-চালিত প্রযুক্তির সম্ভাবনা তুলে ধরেছে। ড. চাষী অ্যাপ বিডিএ্যাপস সামিট ২০২৫-এ ১৩০০-এর বেশি আইডিয়ার মধ্যে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। এটি কৃষকদের ফসলের স্বাস্থ্য নির্ণয়, উৎপাদন বৃদ্ধি এবং টেকসই চাষাবাদ নিশ্চিত করছে।
ড. চাষী হলো বাংলাদেশের প্রথম এআই এবং ডেটা-চালিত ফসল স্বাস্থ্য নির্ণয় প্ল্যাটফর্ম, যা রিয়েল-টাইম ফসলের অবস্থার সঠিক অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। এর মাধ্যমে কৃষকরা সহজে জানতে পারে ফসলের রোগ বা কীটপতঙ্গের সমস্যা, এবং সঠিক পদক্ষেপ নিতে পারে। এটি ঐতিহ্যবাহী চাষাবাদের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে এবং অপ্রয়োজনীয় কীটনাশক ব্যবহারে অর্থ ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি কমায়। বাংলাদেশের কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে ফসলের রোগ ও কীটপতঙ্গ নিয়ে সঠিক তথ্যের অভাবে সমস্যায় ভুগছিলেন। ড. চাষীর উদ্ভাবনী সমাধান সেই ফাঁক পূরণ করেছে।
ড. চাষীর প্রতিষ্ঠাতা মেদিনা আলী ২০২০ সালে বাংলাদেশে আসার পর দেশের কৃষি খাতের চ্যালেঞ্জগুলি সনাক্ত করেন। তার পরিবার ইতিপূর্বে ৪৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে কীটনাশক ও পেস্টিসাইড শিল্পে যুক্ত ছিল। কৃষকরা প্রায়ই সঠিক রোগ নির্ণয় ছাড়াই কীটনাশক ব্যবহার করতেন, যা স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং উৎপাদন ক্ষতি ঘটাতো। এ সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি এবং তার দল তৈরি করেন ড. চাষী অ্যাপ, যা রিয়েল-টাইম ফসল স্বাস্থ্য নির্ণয়, অর্গানিক ও রাসায়নিক সমাধানের পরামর্শ, সঠিক ডোজ এবং স্থানীয় দোকানের সাথে সংযোগ প্রদান করে।
ড. চাষী অ্যাপ কৃষকদের জন্য বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। কোম্পানি একটি B2B মডেল গ্রহণ করেছে, যেখানে সংস্থা ও কোম্পানিগুলোকে কাস্টম সমাধান দেওয়া হয় যারা চুক্তিভিত্তিক কৃষকদের সঙ্গে কাজ করে। প্রথমদিকে এই মডেল গ্রহণ করানো কিছুটা চ্যালেঞ্জিং ছিল, তবে কার্যকারিতা প্রদর্শনের পর এটি সফলভাবে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে।
ড. চাষী অ্যাপের মাধ্যমে দেশের কৃষিতে লক্ষ্য করা যায় উৎপাদন বৃদ্ধি, সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, এবং টেকসই চাষাবাদ। এই উদ্ভাবন জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা, সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু প্রতিরোধ সক্ষমতাকে সমর্থন করে। UN এর টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (SDG) এর সাথে সমন্বিত এই উদ্যোগ কৃষকদের দক্ষতা বাড়াতে এবং বাংলাদেশের কৃষি খাতকে আরও টেকসই করে তুলতে সহায়ক।
বিডিএ্যাপস সামিট ২০২৫ এ বিজয়ী হওয়ার পর ড. চাষীর এই সমাধান দেশের কৃষি খাতের জন্য প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের এক নতুন দিক উন্মোচিত করেছে। তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি উদাহরণ তৈরি করেছে, যা কৃষি এবং প্রযুক্তিকে একত্রিত করে দেশের কৃষি বিপ্লবকে ত্বরান্বিত করবে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।