বই পড়েই নিজের জীবন বদলে ফেলার গোপন কৌশলগুলো জানুন আজই!

বই পড়েই নিজের জীবন বদলে ফেলার গোপন কৌশলগুলো জানুন আজই!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

আজকের ডিজিটাল যুগে বই পড়ে সময় নষ্ট বলে মনে করে অনেকে। কিন্তু বিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানের গবেষণা বলছে, নিয়মিত বই পড়া শুধু জ্ঞানের পরিধি বাড়ায় না, এটি মানুষের চিন্তাভাবনার গঠন, দৃষ্টিভঙ্গি ও উদ্ভাবনী ক্ষমতাকেও গভীরভাবে প্রভাবিত করে।

বই যেভাবে জন্ম দেয় নতুন চিন্তার:

১. মস্তিষ্কের নিউরাল সংযোগ বাড়ায়-

গবেষণায় দেখা গেছে, বই পড়ার সময় মানুষের মস্তিষ্কে নতুন স্নায়বিচার (neural pathways) তৈরি হয়। এতে করে চিন্তাভাবনা আরও সুগঠিত, যুক্তিনিষ্ঠ ও সৃজনশীল হয়ে ওঠে।
 

২. অপর চিন্তা-সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করায়-

বইয়ের মাধ্যমে পাঠক অন্য সংস্কৃতি, ভাষা, জীবনদর্শন, মতবাদ ও ইতিহাসের সঙ্গে পরিচিত হন-যা তার ব্যক্তিগত চিন্তায় বৈচিত্র্য আনে।

 

৩. জিজ্ঞাসু মন তৈরি করে-

ভালো বই প্রশ্ন তোলে, উত্তর দেয় না-এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজতে গিয়েই জন্ম নেয় নতুন চিন্তা। প্রতিটি বইই হতে পারে একেকটি 'mental launchpad'।
 

৪. সমস্যা সমাধানে সহায়ক হয়-

গল্প, উপন্যাস, আত্মজীবনী বা দর্শনভিত্তিক বইয়ের ভেতরে থাকা চরিত্রের সমস্যা, সংগ্রাম ও সমাধানের পদ্ধতি পাঠককে শেখায়-জটিল বাস্তবতা কীভাবে বিশ্লেষণ করতে হয়।
 

যে ধরনের বই নতুন চিন্তার খোরাক জোগায়:

☞ দর্শনভিত্তিক বই – যেমন: মুক্ত চিন্তা, অস্তিত্ববাদ, নৈতিকতা

☞ বিজ্ঞান ও মনস্তত্ত্ব বিষয়ক বই – যেমন: নিউরোসায়েন্স, কগনিটিভ সাইকোলজি

☞ ইতিহাস ও রাজনীতি – সমাজ কাঠামো ও ক্ষমতা বিশ্লেষণে সহায়তা করে

☞ আত্মজীবনী ও ভ্রমণ কাহিনি – অন্যের অভিজ্ঞতার ভিতর দিয়ে নিজস্ব পথ খোঁজার সুযোগ

☞ কল্পবিজ্ঞান ও ফিকশন – বিকল্প বাস্তবতার ভাবনা তৈরি করে; প্রযুক্তি ও ভবিষ্যৎ কল্পনা শাণিত হয়
 

নিউরোসায়েন্টিস্টদের মতে, বই পড়ার সময় 'ডিফল্ট মোড নেটওয়ার্ক' (DMN) নামক মস্তিষ্কের একটি অংশ সক্রিয় হয়-যা গভীর চিন্তা, আত্মবিশ্লেষণ এবং মানসিক ভ্রমণ তৈরি করে। এই অংশটাই নতুন ধারণা গঠনে মুখ্য ভূমিকা রাখে।

অনেকেই প্রশ্ন করেন, "ইন্টারনেট তো তথ্য দেয়-তাহলে বই কেন পড়ব?" তথ্য পাওয়া আর চিন্তার জন্ম দেওয়া এক জিনিস নয়। বই পাঠ ধীরে, মনোযোগ দিয়ে হয় যেখানে পাঠক তথ্যের সঙ্গে যুক্তি, অনুভূতি ও মূল্যবোধের সংমিশ্রণ ঘটায়। এতে চিন্তা গভীর হয়।

দৈনিক ২০–৩০ মিনিট সময় নির্ধারণ করে বই পড়ুন ।  শুধুমাত্র নিজের পরিচিত ঘরানার বাইরে গিয়ে পড়ুন 'মতবিরোধী' লেখকদের বইও । পড়ার সময় হাইলাইট বা সংক্ষিপ্ত নোট নিন। বন্ধুদের সঙ্গে বইভিত্তিক আলোচনায় যুক্ত হন।

বই শুধু মনের খোরাক নয় এটা হতে পারে চিন্তার উৎপত্তিস্থল। প্রযুক্তির উৎকর্ষে বই হয়তো চাপা পড়ে যাচ্ছে, কিন্তু ভবিষ্যতের নতুন ধারণা, উদ্ভাবন ও জ্ঞানের ভিত্তি গড়ে উঠবে সেই বইয়ের পাতা থেকেই, যদি আমরা সময় দেই। তাই, চোখ রাখুন পৃষ্ঠায় চিন্তা খুলবে নিজে থেকেই।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ