কেন খাবেন থানকুনি পাতা? জেনে নিন উপকারিতা ও অপকারিতা

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
থানকুনি পাতা, যাকে ইংরেজিতে "ক্লিনোগেনিয়া ল্যানাটা" (Clinopodium lanatum) বলা হয়, আমাদের দেশের গ্রামীণ অঞ্চলে বহুল পরিচিত একটি ঔষধি গাছ। শুধু যৌবন ধরে রাখতে নয়, তাছাড়াও থানকুনি পাতার উপকারিতা অনেক। এটি প্রাকৃতিক ভেষজ উদ্ভিদ, যা নানা রকম স্বাস্থ্যগত উপকারিতার জন্য পরিচিত। প্রচলিত চিকিৎসায় এবং ঘরোয়া ব্যবহারে থানকুনি পাতার বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। আধুনিক গবেষণাও তার বিভিন্ন স্বাস্থ্যগুণ নিশ্চিত করেছে।
থানকুনি পাতার বৈশিষ্ট্য:
রঙ: পাতাগুলি সবুজ, গোলাকার বা ত্রিভুজাকার আকৃতির।
স্বাদ: স্বাভাবিকভাবে মিষ্টি এবং তিক্ত স্বাদযুক্ত।
বৈজ্ঞানিক নাম: Centella Asiatica
ইংরেজি নাম: Indian Pennywort, Gotu Kola
থানকুনি পাতার ব্যবহারের ধরন:
থানকুনি পাতা কাঁচা, শুকানো অথবা তেলের আকারে ব্যবহার করা যেতে পারে। সাধারণত এটি রস, চা, বা পেস্ট আকারে খাওয়া হয়। এর পাতাগুলির মধ্যে অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল গুণাবলি রয়েছে যা এটি স্বাস্থ্যর জন্য কার্যকরী করে তোলে।
থানকুনি পাতার প্রধান উপকারিতা-
১. প্রদাহ হ্রাস ও ব্যথা উপশম:
থানকুনি পাতায় থাকা প্রাকৃতিক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি উপাদান শরীরের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে অস্থিসন্ধি ব্যথা ও মাসল পেইনে উপশম দেয়।
২. শ্বাসকষ্ট ও সর্দি-কাশির জন্য কার্যকর:
স্থানীয়ভাবে থানকুনি পাতার রস বা সেদ্ধ পান করা হলে শ্বাসকষ্ট, সর্দি, কাশি কমাতে সাহায্য করে। এতে থাকা কিছু ভেষজ যৌগ ফুসফুসের পেশী শিথিল করে শ্বাস প্রশ্বাসে সহজতা আনে।
৩. পাচনতন্ত্রের উন্নতি:
থানকুনি পাতা পাচনশক্তি বাড়াতে সহায়ক। বদহজম, অম্বল কিংবা পেটের ব্যথা কমাতে এটি উপকারি। এতে থাকা বিশেষ এনজাইমগুলি হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।
৪. ত্বকের জন্য উপকারী:
থানকুনি পাতার রস বা পেস্ট ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা যেমন একজিমা, ফাঙ্গাল ইনফেকশন কমাতে সাহায্য করে এবং ত্বককে সতেজ রাখে।
৫. মানসিক চাপ হ্রাস ও মনোশান্তি:
প্রাকৃতিক কিছু কম্পাউন্ড থাকার কারণে থানকুনি পাতার গন্ধ বা রস ব্যবহার করলে মানসিক চাপ কমে এবং ঘুমের গুণগত মান বৃদ্ধি পায়।
বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা-
থানকুনি পাতায় থাকা বিভিন্ন ফাইটোকেমিক্যাল, যেমন ফ্ল্যাভোনয়েড, টেরপিনয়েড এবং ফেনলিক যৌগ, এই সব উপাদান শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং প্রদাহ কমায়। এছাড়া এতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ক্ষমতা বিদ্যমান, যা সংক্রমণ প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ব্যবহার সতর্কতা-
যদিও থানকুনি পাতা অনেক উপকারী, তবে অতিরিক্ত ব্যবহারে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে। গর্ভবতী নারীরা এবং যাঁদের অ্যালার্জি আছে তাদের ব্যবহার করার আগে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
থানকুনি পাতা প্রাচীনকাল থেকেই স্বাস্থ্যসেবায় ব্যবহৃত একটি মূল্যবান ভেষজ উদ্ভিদ। আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাও তার স্বাস্থ্যগুণের পক্ষে কথা বলে। সঠিকভাবে ব্যবহারে থানকুনি পাতা শরীরকে সুস্থ ও সজীব রাখার এক প্রাকৃতিক উপায়।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।