গাজায় তীব্র খাদ্য সংকট, অনাহারে ১১ ফিলিস্তিনির মৃত্যু

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
গাজায় ভয়াবহ মানবিক সংকট দিন দিন আরও প্রকট হয়ে উঠছে। ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় অনাহার ও অপুষ্টিজনিত কারণে অন্তত ১১ জন ফিলিস্তিনি মারা গেছেন। এর মধ্যে অধিকাংশই শিশু। এ নিয়ে চলতি বছরের মার্চ থেকে এখন পর্যন্ত অনাহারে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২৫১ জনে। নিহতদের মধ্যে ১০৮ জনই শিশু।
মানবিক এই বিপর্যয়ের মূল কারণ হিসেবে ইসরাইলি কর্তৃপক্ষের আরোপিত অবরোধকে দায়ী করা হচ্ছে। ২ মার্চ থেকে গাজার সব সীমান্ত ক্রসিং সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিয়েছে ইসরাইল। এর ফলে খাদ্য, ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র গাজায় প্রবেশ করতে পারছে না। এরই মধ্যে উপত্যকার সর্বত্র ভয়াবহ খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে।
জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা বারবার যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তার আহ্বান জানালেও ইসরাইল তা প্রত্যাখ্যান করেছে। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় চালানো অবিরাম হামলায় ইতিমধ্যে প্রায় ৬১ হাজার ৯০০ ফিলিস্তিনি প্রাণ হারিয়েছেন। নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। অব্যাহত বিমান হামলা, ধ্বংসযজ্ঞ ও খাদ্য ঘাটতি গাজাকে এক ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে।
এদিকে, জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের সর্বশেষ প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত গাজায় ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত এক হাজার ৭৬০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে রয়েছে শিশু, নারী ও বৃদ্ধ। এরা সবাই যুক্তরাষ্ট্র-ইসরাইল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন থেকে ত্রাণ নিতে গিয়েছিলেন। মে মাসে এই কেন্দ্র থেকে ত্রাণ বিতরণ শুরু হওয়ার পর থেকেই একাধিকবার ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
গাজার পরিস্থিতি নিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তীব্র নিন্দা চলছে। গত নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্তের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরাইলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলা চলছে।
মানবাধিকার কর্মী ও পর্যবেক্ষকদের মতে, আন্তর্জাতিক চাপ সত্ত্বেও গাজায় বাস্তব পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানবিক বিপর্যয় আরও গভীর আকার ধারণ করছে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।