শেখ হাসিনার নির্দেশে ইলিয়াস আলীকে হত্যা করে জিয়াউল

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও র্যাবের পদচ্যুত কর্মকর্তা মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসানের বিরুদ্ধে গুম-খুনের ভয়াবহ কাহিনি একে একে বেরিয়ে আসছে। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত র্যাবের বিভিন্ন পদে থেকে নিজের টিম নিয়ে নির্বিচারে খুন করতেন তিনি। গোপন ভাষায় তিনি হত্যার নির্দেশ দিতেন—“গলফ করো।” অর্থাৎ, নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যা করতে বলতেন।
বর্তমানে কেরানীগঞ্জের বিশেষ কেন্দ্রীয় কারাগারের ধলেশ্বরী ভবনে ডিভিশনপ্রাপ্ত সেলে বন্দি আছেন জিয়াউল। জেল কর্তৃপক্ষ জানায়, তিনি হত্যা, হত্যাচেষ্টা, প্ররোচনা ও গুরুতর আঘাত-সংক্রান্ত মোট ১৫টি মামলায় আটক রয়েছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, পলাতক সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তার নিরাপত্তা উপদেষ্টা তারিক সিদ্দিকের প্রত্যক্ষ নির্দেশেই এসব গুম ও হত্যাকাণ্ড ঘটাতেন তিনি। ভিকটিমদের প্রথমে গোপন স্থানে, যা “আয়নাঘর” নামে পরিচিত, সেখানে আটক রাখা হতো। এরপর বিভিন্নভাবে হত্যা করে লাশ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়া হতো বা রেললাইনে ফেলে দেওয়া হতো, যাতে তা অজ্ঞাত লাশ হিসেবে শনাক্ত হয়।
২০১১ থেকে ২০১৫ পর্যন্ত সময়ে কমলাপুর থেকে টঙ্গি পর্যন্ত রেলপথে অজ্ঞাত লাশের ছড়াছড়ি ছিল। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা ছিল জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বাধীন দলের হত্যাকাণ্ডের শিকার মানুষ। কখনো নৌকায় করে ভিকটিমকে মাঝনদীতে নিয়ে গুলি করা হতো। কখনো আবার লাশকে সিমেন্টভর্তি বস্তার সঙ্গে বেঁধে নদীতে ডুবিয়ে দেওয়া হতো। এমনকি একদিনে ১১ জন বা ১৩ জনকে হত্যা করার ঘটনাও ঘটেছে তার নেতৃত্বে।
সবচেয়ে আলোচিত গুম-খুনের ঘটনাটি হলো বিএনপির প্রভাবশালী নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলী এবং তার গাড়িচালক আনসার আলীর অন্তর্ধান। ২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল রাতে ঢাকার বনানী থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। পরবর্তীতে অনুসন্ধানে উঠে আসে, জিয়াউল আহসানের নেতৃত্বাধীন ‘কিলিং স্কোয়াড’ই তাদের হত্যা করে। হত্যার পর লাশ যমুনা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
এই ঘটনাটি শুধু একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নয়, বরং বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে আলোচিত ও রহস্যময় গুমের কাহিনি। এখন প্রশ্ন উঠেছে, এই নৃশংসতার পুরো চেইন অব কমান্ড কবে নাগাদ বিচারের মুখোমুখি হবে।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।