পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া বাংলাদেশের প্রথম নারী তহুরা

পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া  বাংলাদেশের প্রথম নারী তহুরা
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

পায়ে হেঁটে টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়ায় তাহুরা সুলতানা রেখা নামে ২৫ বছরের হার না মানা এক অদম্য সাহসী তরুণী।

তাহুরা বলেন, তাঁর ‘সাগর থেকে হিমালয়’ নামের প্রকল্পের অংশ হিসেবে ক্রস কান্ট্রি হাইকিংয়ের তিনটি পর্ব ছিল। এর মধ্যে ২৯ নভেম্বর টেকনাফ থেকে শুরু করে হেঁটে যমুনার পাড়ে আসেন। যমুনা সেতুতে তিনি হাঁটার অনুমতি না পেয়ে ১৬ ডিসেম্বর তিনি সাঁতরে যমুনা নদী পার হন। সেখান থেকে প্রথম পর্ব শেষ করে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো নারী অভিযাত্রী দলের সদস্য হিসেবে তিনি শীতকালীন হিমালয় অভিযানে নেপালে চলে যান। সেখানে ২৫ দিন থেকে আবারও বাংলাদেশে ফিরে আসেন। সেটি ছিল এ অভিযানেরই দ্বিতীয় পর্ব। এরপর তৃতীয় পর্বে গত ১৮ জানুয়ারি তিনি যমুনার পাড় থেকে আবারও হাঁটা শুরু করেন। সর্বশেষে তিনি গতকাল সন্ধ্যায় হেঁটে বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্টে পৌঁছান।

বিষয়টি ফেসবুকে পোস্টের মাধ্যমে জানিয়েছেন এ ভ্রমণকন্যা। হাঁটা শুরু করলেও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কল্যাণে পথে পথে তাকে সঙ্গ দিয়েছেন পরিচিত অপরিচিত অনেকে শুভাকাঙ্ক্ষী ।

জানা যায়, তাহুরা সুলতানা চট্টগ্রামের বাঁশখালী গন্ডামারা ইউনিয়নের রশিদ আহমেদ ও তৈয়বা খাতুন দম্পতির মেয়ে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সবার ছোট।  চট্টগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজ থেকে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেছেন।
তাহুরা সুলতানা জানান, পরিবারে আমি সবার ছোট। ছোট থেকেই ঘোরাঘুরি পছন্দ করি। চ্যালেঞ্জিং কোনো বিষয় গ্রহণ করতে আমার ভালো লাগে। এসব কারণেই হেঁটে দেশভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিয়ে যাত্রা শুরু করি। এ সময়ের হাঁটতে গিয়ে যেখানে বিরতি নিয়েছি সেখানে মানুষের ভালোবাসা ও স্বতঃস্ফূর্ত সাড়ায় আমি অভিভূত

কেন এই হেঁটে ভ্রমণ বিষয়ে জানতে চাইলে তাহুরা বলেন, সুস্বাস্থ্যের জন্য হাঁটা জরুরি। তাই এই পদযাত্রার মাধ্যমে মানুষও যাতে হাঁটায় উদ্বুদ্ধ হয়, সেটি আমি চাই। একই সঙ্গে হেঁটে হেঁটে আমার প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের সৌন্দর্য উপভোগ করার পাশাপাশি মানুষকে হাঁটায় উদ্বুদ্ধ করতেই আমার এই যাত্রা। দেশের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে এ জার্নির খরচ আমার নিজেরই। বিশেষ করে ‘জুম ওয়াইল্ড’ নামে ট্রাভেল এজেন্সির সঙ্গে ট্রাভেলিংয়ের প্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রী নিয়ে দোকান আছে। সেইখান থেকে অর্জিত টাকা জমিয়ে আমি এ জার্নি করেছি।

বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টের জিরোফলকে পৌঁছেই তাহুরা বলেন, ১ হাজার কিলোমিটার মাইলফলক শেষ হলো। তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্টে এসে। আমি স্পেশাল ধন্যবাদ জানাতে চাই বিজিবিকে। আমি আসলে খুব লেটে চলে আসছি, আসলে আমারই এটা মিসটেক। কারণ আজকে শেষ করতে গিয়ে আমার সন্ধ্যা ৫টা বা ৬টা হয়ে যায়। সময় শেষ হয়ে যাওয়ার পরেও আমাকে এখানে আসতে দেওয়া হয়েছে। এটার জন্য আমি খুবই কৃতজ্ঞ ও ধন্যবাদ।
এ দীর্ঘ জার্নিতে যারা পাশে ছিলেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে তাহুরা বলেন, আমার এ জার্নির সঙ্গে এই মুহূর্তে যারা জড়িত আছে তাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ। সেই সঙ্গে যারা আমার এ জার্নির সঙ্গে ছিল সবার প্রতি আমি খুবই কৃতজ্ঞ ও ভালবাসা সবাইকে। আর আমার পুরো জার্নিতে পুরো বাংলাদেশের ১ হাজার কিলোমিটার হাইকিং, সঙ্গে যমুনা নদী সাঁতরানো, হিমালয়ের তিনটা পাহাড়ের যে অর্জনগুলো ছিল এই জায়গায় শেষ হলো। জার্নিটা শেষ করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত


সম্পর্কিত নিউজ