বিছানার পাশে একটা ফুলই কি রোগীকে করে তোলে দ্রুত সুস্থ?-বিশ্বাস না হলেও জানুন বিজ্ঞান কী বলে!

বিছানার পাশে একটা ফুলই কি রোগীকে করে তোলে দ্রুত সুস্থ?-বিশ্বাস না হলেও জানুন বিজ্ঞান কী বলে!
  • Author,
  • Role, জাগরণ নিউজ বাংলা

শত শত বছর ধরে মানুষ ফুলকে সৌন্দর্য ও আরোগ্যের প্রতীক মনে করে এসেছে। আজকের আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রও ফুলের 'মনস্তাত্ত্বিক' ও 'পরিবেশগত' উপকারিতাকে মান্যতা দিচ্ছে, বিশেষ করে যখন রোগী হাসপাতালে ভর্তি থাকে।

ফুলের রঙ ও ঘ্রাণ মানুষের মস্তিষ্কের আবেগ নিয়ন্ত্রণকারী 'লিম্বিক সিস্টেম'-এ সরাসরি প্রভাব ফেলে। ল্যাভেন্ডার, গোলাপ, জেসমিন ইত্যাদি ফুলের ঘ্রাণ উদ্বেগ ও অবসাদ কমায়, আর মনের চাপ কমিয়ে মনকে শান্ত করে।

গোলাপি ও হালকা হলুদ রঙের ফুল দেখলে চোখ আর মন শান্ত হয়, যা রোগীর মানসিক অবস্থার উন্নয়ন ঘটায়। রঙের চিকিৎসা (কালার থেরাপি) এ ব্যাপারে অনেক সময় ফুলকে প্রধান মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে।

বিশ্বব্যাপী গবেষণায় দেখা গেছে, হাসপাতালে ফুল থাকার সময় রোগীর রক্তচাপ স্থিতিশীল থাকে এবং হার্টবিট স্বাভাবিক থাকে। বিশেষ করে দীর্ঘমেয়াদী রোগীরা ফুলের সৌরভে কিছুটা স্বস্তি পান। মানসিক চাপ কমায় রোগীর শারীরিক ব্যথা অনুভবের মাত্রা হ্রাস পায় বলে প্রমাণিত। ফুল ঘিরে থাকা পরিবেশে রোগীরা ঔষধে ভালো সাড়া দেয়।

একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, ফুল থাকা রুমে ভর্তি রোগীরা ১৫-২০% কম উদ্বেগ অনুভব করেছে। মানসিক চাপ কমায় তাদের আরোগ্যের গতি বেড়েছে।
 

জাপান ও নেদারল্যান্ডের হাসপাতাল:
ফুল ব্যবহারের মাধ্যমে রোগীর পুনরুদ্ধারে মানসিক সান্ত্বনা ও আশা বৃদ্ধি পাওয়ায়, হাসপাতালগুলো তাদের পরিবেশে ফুলের সংখ্যা বাড়িয়েছে।
 

কিছু বিশেষ ফুল ও গাছ যেমন অ্যাস্পারগাস ফার্ন বা স্নেক প্ল্যান্ট বাতাস থেকে দূষণ এবং ক্ষতিকর গ্যাস শোষণ করতে সাহায্য করে, যা হাসপাতালের ভিতরে সুস্থতা বাড়ায়। ফুল ও গাছপালা বাতাসে আর্দ্রতা বজায় রাখতেও সাহায্য করে, যা শ্বাসনালী ও ত্বকের জন্য উপকারী।
 

পরামর্শ ও সতর্কতা:

⇨ অ্যালার্জি বিষয়ক সতর্কতা:
কিছু রোগীর ক্ষেত্রে ফুল বা তার গন্ধ অ্যালার্জির কারণ হতে পারে। তাই ফুলের ধরন নির্বাচন ও রোগীর অ্যালার্জি পরীক্ষা জরুরি।
 

⇨ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা:
ফুল থেকে পড়ে যাওয়া পাতা বা মরা ফুল নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে, কারণ সেগুলো জীবাণু ও ছত্রাকের উৎস হতে পারে।
 

⇨ ফুলের ধরন ও ঘ্রাণ:
সুগন্ধি বেশি এমন ফুল যেমন লিলি বা গার্ডেনিয়া সব রোগীর জন্য উপযোগী নাও হতে পারে। বরং হালকা ঘ্রাণবিশিষ্ট ফুল বেছে নেওয়া উচিত।
 

⇨ রোগীর ইচ্ছা ও আরাম:
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, রোগীর ইচ্ছা ও স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখা।
 

আধুনিক হাসপাতালগুলো শুধুমাত্র চিকিৎসা নয়, 'আরোগ্য পরিবেশ' তৈরি করার দিকে বেশি মনোযোগ দিচ্ছে। সেখানে ফুল, গাছপালা ও প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহার বাড়ছে। এটি রোগী, আত্মীয় ও চিকিৎসক সকলের মনোবল বাড়ায়।

ফুল শুধু সাজসজ্জার উপকরণ নয়, এটি হতে পারে হাসপাতালের একটি প্রাকৃতিক থেরাপি উপাদান। ফুলের উপস্থিতিতে রোগীর মন শান্ত, শরীর আরাম পায়, আর তাই দ্রুত সুস্থতার পথ সহজ হয়। ফুলের মাধুর্যে ভরে উঠুক হাসপাতালের প্রতিটি কোণা, আর স্বাস্থ্য লাভের আলোর ঝিলিক ছড়াক চারদিকে।

আপনার প্রতিক্রিয়া জানান

❤️
Love
0
(0.00 / 0 total)
👏
Clap
0
(0.00 / 0 total)
🙂
Smile
0
(0.00 / 0 total)
😞
Sad
0
(0.00 / 0 total)

মন্তব্যসমূহ

এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।


সম্পর্কিত নিউজ