সত্যিই কি পেঁয়াজের তেল চুল গজায়? নাকি সবটাই হাইপ? শুনুন গবেষণার ভাষায়

- Author,
- Role, জাগরণ নিউজ বাংলা
পেঁয়াজ (Allium cepa) থেকে প্রাপ্ত তেল প্রাচীনকাল থেকে প্রাকৃতিক ঔষধি হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। পেঁয়াজের তেল তৈরিতে সক্রিয় রাসায়নিক যৌগ যেমন আল্লিসিন, ফ্ল্যাভোনয়েড এবং সালফার যৌগ থাকে, যা বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা দেয়। আজকের আধুনিক গবেষণায় দেখা গেছে, এটি চুল, ত্বক ও শরীরের রোগ প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
বিস্তারিত প্রক্রিয়া:
⇨ তাজা ও ভালো মানের পেঁয়াজ ব্যবহার করা হয়। পেঁয়াজ কাটার পর ১৫-২০ মিনিট রেখে দিলে কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।
⇨ পেঁয়াজের টুকরোগুলো ভেজে বা বাষ্পীয়ভাবে উত্তোলন করা হয়। সাধারণ গৃহস্থালী পদ্ধতিতে পেঁয়াজ কাটা টুকরো তেলের সঙ্গে মিশিয়ে গরম করে ২০-৩০ মিনিট রাখা হয়।
⇨ গরম তেল ছেঁকে আলাদা করে পরিষ্কার কাচের বোতলে সংরক্ষণ করা হয়।
⇨ শিল্পায়িত পদ্ধতিতে বাষ্পীয় তেল সংগ্রহ করা হয়, যা বেশি বিশুদ্ধ ও কার্যকর হয়।
⇨ ঠান্ডা ও অন্ধকার স্থানে সংরক্ষণ করলে তেলের গুণগত মান ভালো থাকে।
উপাদান ও বৈজ্ঞানিক কার্যকারিতা:
⇨ আল্লিসিন (Allicin): ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাস প্রতিরোধে কার্যকর, অ্যান্টিবায়োটিক গুণ সম্পন্ন।
⇨ ফ্ল্যাভোনয়েড: শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, দেহের কোষ রক্ষায় সহায়ক।
⇨ সালফার যৌগ: প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করে।
⇨ ভিটামিন সি ও ই: ত্বক ও চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
উপকারিতা;
⇨ চুলের বৃদ্ধি ও স্বাস্থ্য: চুল পড়া কমায়, নতুন চুল গজাতে সাহায্য করে। স্ক্যাল্পের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে চুলের গোড়া মজবুত করে।
⇨ ত্বকের যত্ন: ফুসকুড়ি, ব্রণ ও প্রদাহ কমায়। ত্বককে মসৃণ ও উজ্জ্বল করে তোলে।
⇨ অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল প্রভাব: ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাক থেকে সুরক্ষা দেয়।
⇨ রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি: শরীরের বিভিন্ন অংশে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পেয়ে সুস্থতা বৃদ্ধি পায়।
⇨ হরমোন নিয়ন্ত্রণ: বিশেষ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে পেঁয়াজের তেল হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সাহায্য করে।
সতর্কতা:
⇨ ত্বক পরীক্ষা: প্রথমবার ব্যবহারের আগে প্যাচ টেস্ট করে ত্বকের সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করা উচিৎ।
⇨ অ্যালার্জি: যাদের পেঁয়াজ বা তেলের প্রতি এলার্জি আছে, তাদের ব্যবহার এড়ানো উচিত।
⇨ অতিরিক্ত ব্যবহারে সমস্যা: বেশি ব্যবহারে ত্বকে জ্বালা, লালচে ভাব বা শুষ্কতা হতে পারে।
⇨ গন্ধ সমস্যা: তেলের তীব্র গন্ধ অনেকের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে, তাই প্রয়োজনে অন্যান্য প্রাকৃতিক অরোমা মিশিয়ে ব্যবহার করা যেতে পারে।
ব্যবহার ও প্রয়োগ:
⇨ মাথার ত্বকে ম্যাসাজ: সপ্তাহে ২-৩ বার স্ক্যাল্পে প্রয়োগ করলে চুলের বৃদ্ধি ত্বরান্বিত হয়।
⇨ ত্বকে প্রয়োগ: ব্রণপ্রবণ ত্বকে সামান্য পরিমাণে ব্যবহার উপকারী।
⇨ মিশ্রণ: নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করলে গন্ধ কমে এবং ত্বক-চুলের জন্য আরও উপকারী হয়।
পেঁয়াজের তেল হলো একটি প্রাকৃতিক, কার্যকর ও বহুমুখী তেল যা সঠিকভাবে ব্যবহার করলে চুল ও ত্বকের জন্য এক মহৎ উপহার। তবে প্রস্তুতি ও ব্যবহারে যত্ন ও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, যাতে এর সর্বোচ্চ স্বাস্থ্য উপকারিতা পাওয়া যায়।
আপনার প্রতিক্রিয়া জানান
মন্তব্যসমূহ
এই সংবাদের জন্য এখনো কোনো মন্তব্য নেই।